করোনায় দীর্ঘদিন মাদরাসা বন্ধ। পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় বাড়িতে বসিয়ে না রেখে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে পরিবার। এই ছাত্রীর বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ছুপুয়া গ্রামে। একই এলাকার আরো দুই কিশোরীর একই দশা। বাল্যবিয়ে থেকে বাঁচতে বাধ্য হয়ে বাড়ি ছাড়ে এই তিন কিশোরী।
পুলিশ জানায়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসাইনমেন্ট জমা দেওবার কথা বলে গত ১৭ আগস্ট বাড়ি ছাড়ে তিনজন। কুমিল্লা ইপিজেডের কারখানায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবে বলে পরিকল্পনা আঁটে তারা। গলার স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল বন্ধক রেখে কুমিল্লার সিটি কর্পোরেশনের আশ্রাফপুর এলাকায় একটি বাসাও ভাড়া নেয় এই তিন কিশোরী।
এদিকে, বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর ফিরে না আসায় চৌদ্দগ্রাম থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করে তাদের অভিভাবকেরা। একই এলাকার সমবয়সী তিন কিশোরীর নিখোঁজ আবেদনের প্রেক্ষিতে তিন দিন ধরে তাদের খোঁজ করে পুলিশ। শুক্রবার রাতে পুলিশ তাদেরকে ভাড়া বাসা থেকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
ওই তিন ছাত্রী চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ছুপুয়া ছফরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসার সপ্তম ও দশম এবং ধর্মপুর নাজিম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। তারা সবাই চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের কিং ছফুয়া গ্রামের একই এলাকার বাসিন্দা।
এক কিশোরীর বড় বোন জানান, দীর্ঘদিন মাদরাসা বন্ধ থাকায় সে (ছোট বোন) বাড়িতেই ছিলো। কিন্তু এভাবে বাড়ি বসে থাকায় পরিবারের লোকজন প্রায় তাকে বিয়ের কথা বলে। কিন্তু এতে সে প্রায় ক্ষুব্ধ হয়। অন্য দুই কিশোরীর সঙ্গেও একই ঘটনা ঘটে। বিয়ে থেকে বাঁচতেই তারা এমন সিদ্ধান্ত নেয়।
ছুপুয়া ছফরিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা অধ্যক্ষ মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘গত কয়েকদিনে সপ্তম এবং দশম শ্রেণির জন্য কোন এসাইনমেন্ট জমা বা করার কথা ছিলো না। তারা বাড়ি থেকে পালিয়েছে এমন খবরও আমার জানা নেই।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, গত ১৭ আগস্ট একই এলাকার ৩ কিশোরী নিখোঁজ হয়। অভিভাবকরা ডায়েরি করলে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুক্রবার বিকেলে তাদেরকে উদ্ধার করে। তিন কিশোরীকে তাদের অভিভাবকের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।