English

26 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ২৬, ২০২৪
- Advertisement -

নারী সাংবাদিকের মৃত্যু: বাবা চান দাফন করতে, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাবি দাহ

- Advertisements -

রাজধানীর বেইলি রোডে আগুনে নিহত নারী সাংবাদিকের নাম জটিলতার কারণে লাশ এখনও হস্তান্তর করা হয়নি। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তার আসল নাম বৃষ্টি খাতুন। তার বাবা সবুজ শেখ জানান, ইসলামি বিধান মেনে মেয়ের মরদেহ দাফন করতে চান। তবে এই দাবি নাকচ করেছেন পূজা উদযাপন পরিষদ নেতারা। তারা বলছেন, নিহতের মরদেহ দাফন নয়, দাহ হবে সনাতন রীতিতে।

সহকর্মী তুষার হাওলাদারের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার রাতে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে কাচ্চি ভাই রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন ওই নারী সাংবাদিক। সেসময় ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ গেছে মোট ৪৬ জনের। ওই নারী সাংবাদিকও রয়েছেন তাদের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে যাকে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে শনাক্ত করেন সহকর্মীরা।

বৃষ্টি খাতুন নাকি অভিশ্রুতি শাস্ত্রী এ দুই নামের জটিলতায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইন্সটিটিউটের মর্গে পড়ে আছে মরদেহ। হস্তান্তর নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা।

এদিকে আহতদের চিকিৎসায় ১৭ সদস্যের যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে, ডা. শারফুদ্দিন তার একজন সদস্য। ওই নারী সাংবাদিকের পরিচয় এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

জানা গেছে, অভিশ্রুতি কিংবা বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়ীয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম প‌শ্চিমপাড়া। সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি। তবে তার বায়োডাটায় দেখা গেছে তিনি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী।

বৃষ্টির ফুফু রোজিনা আক্তার জানান, তিনি সাভারে থাকেন। বৃষ্টি তার সঙ্গেই সাভারে থাকতেন। যাতায়াতের দূরত্ব কমানোর চিন্তা করেই বৃষ্টি হোস্টেলে ওঠেন। এখন নাম জটিলতায় তার লাশটিও পেতে পরিবারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে প্রশাসন থেকে জানিয়েছে।

তিনি বলেন, ২৯ ফেব্রুয়ারি বৃষ্টি তার মা বিউটি বেগমকে ফোন করে জানিয়েছিল অনুষ্ঠান শেষ হলো। সে হোস্টেলে ফিরবে। তারপর রাতে কথা বলবে। কিম্তু আর কথা হয়নি। পরের দিন ১ মার্চ খবর আসলো বৃষ্টি আর নেই।

৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ বলেন, অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর আসল নাম বৃষ্টি। তিনি মুসলিম। বৃষ্টি ইডেন কলেজে পড়াশোনা করতেন। সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে তার নাম বৃষ্টি।

নিহত সাংবাদিকের বাবা শাবলুল আলম সবুজ রাজধানী ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। দরিদ্র পিতার তিনটিই কন্যাসন্তান। বৃষ্টি খাতুন সবার বড়। মেজ মেয়ে শারমিনা সুলতানা ঝর্ণা রাজবাড়ী সরকারি কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্রী। ছোট মেয়ে বর্ষা পড়ে দশম শ্রেণিতে।

বৃষ্টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে পড়েছেন গ্রামের বিদ্যালয়ে। উচ্চ মাধ্যমিক পড়েছেন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঢাকার ইডেন কলেজে দর্শন শাস্ত্র নিয়ে পড়েছেন। উচ্চশিক্ষা শেষ করার আগে বিসিএস কোচিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

নিহতের ছোট বোন শারমিনা সুলতানা ঝর্ণা বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুরে মায়ের সঙ্গে বৃষ্টির শেষবার মোবাইল ফোনে কথা হয়।

তার বোন হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নে ঝর্ণা বলেন, এটা হতেই পারে না। আমার বোন মনেপ্রাণে একজন মুসলিম। সে কখনই নিজ ধর্ম ত্যাগ করেনি। তবে সম্প্রতি তার বোন অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে ফেসবুক আইডি খুলেছিলেন এবং ওই নামেই সাংবাদিকতা করতেন বলে স্বীকার করেন ঝর্ণা।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন