বাংলাদেশের ক্রিকেটে ‘ব্যাড বয়’ খ্যাত নাসির হোসেন, তামিমা তাম্মি নামের এক নারীকে বিয়ে করে তুমুল বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে তামিমা আগের স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই নাসিরকে বিয়ে করেছেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলাও করছেন তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব হাসান।
এ বিষয়ে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সংবাদ সম্মেলন করেছেন নাসির-তামিমা। সংবাদ সম্মেলনে তামিমা যে কাগজ দিয়েছেন তাতে দেখা যায় তিনি ২০১৬ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাকিব হাসানকে ‘স্ত্রী কর্তৃক তালাক নোটিশ’ দিয়েছেন। অন্যদিকে তার পাসপোর্টে দেখা যায় ২০১৮ সালে রাকিব হাসানকে স্বামী ‘উল্লেখ’ করে ‘পাসপোর্ট’ ইস্যু করেছেন তামিমা।
একইদিন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে মামলা দায়ের করেন নাসিরের স্ত্রীর সাবেক স্বামী মো. রাকিব হাসান। রাকিব নিজেই মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাকিবের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ইশরাত হাসান।
নাসির ও তামিমা সুলতানার বিরুদ্ধে মামলার ডকেটে পাসপোর্টের একটি নথী সংযুক্ত করেছেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। যেটিতে তামিমার স্বামীর নাম উল্লেখ রয়েছে ‘রাকিব হাসান’। একই সঙ্গে ইমার্জেন্সি কন্ট্রাকেও স্বামী রাকিব হাসানের নাম উল্লেখ রয়েছে।
পাসপোর্টটি প্রদান করার তারিখ হিসেবে উল্লেখ রয়েছে- ৪ মার্চ ২০১৮ সাল। যেটির মেয়াদোত্তীর্ণ ৩ মার্চ ২০২৩ সালের কথাও উল্লেখ রয়েছে।
পাসপোর্টের ধরণ বলছে, এটি রি-ইস্যু করা। পাসপোর্টটির বর্তমান নম্বর বিআর দিয়ে শুরু হয়ে ৫৩ ডিজিট উল্লেখ করে শেষ হয়েছে। অন্যদিকে তার পুরাতন পাসপোর্টটি বিএ দিয়ে শুরু হয়ে ১১ ডিজিট উল্লেখ করে শেষ হয়েছে।
এই পাসপোর্ট ও তালাক নোটিশের স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ডিভোর্স পেপার সঠিক না-কি পাসপোর্ট সঠিক সেটা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এ বিষয়ে রাকিব হাসানের আইনজীবী ইশারত হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, তামিমা সুলতানা আমার মক্কেল রাকিবের স্ত্রী হয়েও তাকে তালাক না দিয়ে ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেছেন। যা আইনসিদ্ধ নয়। এখানে রাকিব হাসান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তার সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে এবং তার মানহানি হয়েছে।
এ সংক্রান্তে পাসপোর্টের কাপিসহ অন্যান্য নথী আমরা মামলার ডকেটে সংযুক্ত করেছি। এসব ডকুমেন্ট আদালত বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষা নীরিক্ষা পূর্বক নাসির ও তামিমার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন বলে আমরা আশাবাদী। ইতোমধ্যে মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলাটি তদন্ত করে আগামি ৩০ মার্চ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মামলার এজহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও রাকিবের বিয়ে হয়। তাদের ৮ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। তাম্মি পেশায় একজন কেবিন ক্রু। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাম্মি ও ক্রিকেটার নাসির হোসেনের বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা রাকিবের নজরে আসে। পরে পত্র-পত্রিকায় তিনি ঘটনার বিষয়ে সম্পূর্ণ জেনেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, রাকিবের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক চলমান অবস্থাতেই তাম্মি নাসিরকে বিয়ে করেছেন; যা ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইন অনুযায়ী সম্পূর্ণ অবৈধ। নাসির তাম্মিকে প্রলুব্ধ করে নিজের কাছে নিয়ে গিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসে বিয়ে করেন ক্রিকেটার নাসির হোসেন। গেল বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) হলুদ সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়। পরে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) তাদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠে স্বামীকে রাকিবকে তালাক না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে বিয়ে পিড়িতে বসেন স্ত্রী তামিমা শবনম।
গত শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাইসা ইসলাম বাবুনি নামক এক ফেসবুক ব্যবহারকারীর একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। যেখানে তামিমার স্বামী রাকিবের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, এখনও তাদের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক রয়েছে। তাদের ঘরে রয়েছে ৮ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তানও। তালাক না দিয়ে নতুন বিয়ে করায় তামিমার বিরুদ্ধে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন রাকিব।