ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জে উর্মিলা আক্তার (১৮) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সোমবার উর্মিলার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ ৬ জনকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
গৃহবধূ উর্মিলা উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের টঙ্গিপাড়া গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী ও একই উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের টানপাড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। তার এক বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
জানা যায়, গত শনিবার রাতে উর্মিলা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। রবিবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উর্মিলার মৃত্যু হলে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে নিহত উর্মিলার মা-বাবাসহ পিত্রালয়ের লোকজন উপস্থিত হলে ময়নাতদন্ত শেষে তাদের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়।
উর্মিলার মা কল্পনা বেগম জানান, প্রায় আড়াই বছর আগে শরীফপুর ইউনিয়নের টঙ্গীপাড়া গ্রামের বিল্লাল মিয়ার ছেলে আনিসের সাথে তার মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী উর্মিলাকে মারধর করত। বেশ কয়েকবার তিনি মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে টাকা দিয়েছেন। ইদানিং আনিস গাড়ি কিনবে বলে ৫ লাখ টাকা দাবি করলে টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এ ঘটনায় আনিস উর্মিলাকে মারধর করে। উর্মিলার শ্বশুর বিল্লাল মিয়া ও শাশুড়ি আনোয়ারা বেগমও ছেলের পক্ষ নিয়ে তাকে মানসিকভাবে অত্যাচার করতে থাকে।
এরই জের ধরে শনিবার রাতে আনিস ও তার মা মিলে উর্মিলাকে মারধর করে হারপিক খাইয়ে দেয় বলে কল্পনা বেগমের অভিযোগ।
নিহত উর্মিলার চাচা আনোয়ার হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা রবিবার সকালে হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় উর্মিলা মারা যাবার পর লাশ রেখে তার (শ্বশুরবাড়ির লোকজন) পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মেয়েটা বিয়ের পর থেকেই খুব অসুখী ছিল। স্বামী-শ্বশুর প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য উর্মিলাকে মারধর করত। শেষ পর্যন্ত তারা উর্মিলাকে হারপিক খাইয়ে মেয়ে ফেলেছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আজাদ রহমান জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।