মেহেদীর রং এখনো মুছেনি। কাটেনি আনন্দের রেশ। কিন্তু কে জানতে আনন্দের রেশ না কাটতে লাশ হতে হবে নববধূ সামিয়াকে। বিয়ের মাত্র ১৯ দিনের মাথায় মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়ি ফিরেছে তার লাশ। এর আগে দুপুরে স্বামীর টঙ্গীর কাঁঠালদিয়ার বাড়ির শয়নকক্ষ থেকে তার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে টঙ্গী পশ্চিম থানার পুলিশ।
নিহত সামিয়া সুলতানা (২০) গাজীপুরের কালীগঞ্জের তারাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তিনি কালীগঞ্জের মোক্তারপুর ইউনিয়নের রাধুরা গ্রামের কৃষক মো. বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে তৃতীয় ছিলেন তিনি।
নিহতের চাচা আবদুল কাদির জানান, গত ১৭ সেপ্টেম্বর টঙ্গী পশ্চিম থানার কাঁঠালদিয়া এলাকার ব্যবসায়ী মো. কবির হোসেনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় সামিয়ার। বিয়ের দিনেই নববধূকে তুলে বাড়িতে নিয়ে যায় কবির। তুলে নেওয়ার ৪ দিন পর স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে শ্বশুর বাড়ি আসে সে। গত শুক্রবার সামিয়াকে নিয়ে টঙ্গী ফিরে কবির। ফিরেই অকারণে খারাপ আচরণ শুরু। জানায় ‘বাবা-মার চাপে সামিয়াকে বিয়ে করেছে। অন্য মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল তার’। এ নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দেয়।
সোমবার রাতে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। ‘অপছন্দ’ এবং ‘ঝগড়ার’ বিষয়টি সামিয়া রাতেই বড় বোন সেলিনাকে মোবাইলে জানায়। সকাল ১০টায় মৃত্যুর খবর পেয়ে তারা টঙ্গী থানায় গিয়ে সামিয়ার লাশ দেখতে পান। কবির তার ভাতিজিকে হত্যা করে লাশ গলায় উড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রেখে থাকতে পারে বলে ধারণা তাঁর। কারণ ঝুলন্ত অবস্থায় সামিয়ার পা হাটু পর্যন্ত বিছানায় লাগানো ছিল।
টঙ্গী পশ্চিম থানার এসআই মো. কায়সার হাসান ফারুক জানান, মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কবির ব্যবসার কাজে বের হয়ে গেলে সামিয়া ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘরে শুয়ে পড়েন। সকাল ৮টা পর্যন্ত ঘর থেকে বের না হলে শাশুড়ি জানালা দিয়ে দেখতে পান ফ্যানের সঙ্গে সামিয়ার লাশ ঝুলছে। পরে পুলিশে খবর দিলে বেলা সাড়ে ৯টার দিকে লাশ উদ্ধার করা হয়। মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় টঙ্গী থানায় সামিয়ার বাবা বাদি হয়ে অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।