প্রেমের টানে এবার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রাজশাহী এসেছেন ২০ বছর বয়সী মালয়েশিয়ান তরুণী স্যান্ডি। মন দেওয়া-নেওয়ার পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন প্রেমিক জুলফিকারের সঙ্গে।
জুলফিকার রাজশাহী মহানগরীর বিনোদপুর এলাকার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। জুলফিকার প্রায় ৮ বছর আগে পড়ালেখার জন্য মালয়েশিয়ায় যান। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন একটি চাকরিও করতেন। ওই সময় জুলফিকারের সঙ্গে পরিচয় হয় এই তরুণীর। এরপর দুজনের মধ্যকার প্রেমের সম্পর্ক আরও গভীরতা পায়। শেষ পর্যন্ত ভালোবাসার টানে বাবা-মাকে ছেড়ে উড়ে আসেন রাজশাহীতে।
এখানে এসে জুলফিকারের সঙ্গে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন স্যান্ডি। তার পরিবারও স্যান্ডিকে আনন্দ উৎসবের মাধ্যমেই বরণ করে নেন। ঈদের তিন দিন পর গত ১৪ জুলাই ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এই বিয়েতে খুশি জুলফিকারের গোটা পরিবার, স্বজন, বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
বিয়ের পর জুলফিকার বলেন, এই বিয়ে নিয়ে আমার ভাই-বোন ও মা আত্মীয়-স্বজন সবাই খুব খুশি। স্যান্ডি আবারও প্রমাণ করলেন সত্যিকারের ভালোবাসা কোনো বাধা, ধর্ম ও ভাষা মানে না। স্যান্ডি খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী।
তিনি বলেন, সে ধর্মান্তরিত হয়েছেন আমার জন্য। তার পরিবার ছেড়েছে। ধর্মান্তরিত হওয়ার পর তার নাম রাখা হয়েছে আলিশা অ্যানি। বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করছেন। তার এই ভালোবাসা অবশ্যই আমার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি।
বিয়ের পর আলিশা অ্যানি জানান, বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ। আগামী সপ্তাহেই স্বামী জুলফিকারকে নিয়ে তিনি নিজ দেশ মালয়েশিয়ায় ফিরতে চান। সেখানে দুজনই নতুনভাবে নিজ ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চান।
তিনি মালয়েশিয়ার একজন পাসপোর্ট কর্মকর্তা এবং তার স্বামী জুলফিকার এখন একজন ব্যবসায়ী। তবে বাংলাদেশ এবং রাজশাহী তার ভীষণ ভালো লেগেছে।
মালয়েশিয়ান নববধূ বলেন, তার শাশুড়ি মা তাকে পছন্দ করায় এবং পুত্রবধূ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় অনেক খুশি এবং আনন্দিত। শাশুড়ির সঙ্গে সংসারের কাজ করতে চান। কিন্তু তার শাশুড়ি ভালোবেসে কিছুই করতে দেন না।
এদিকে মালয়েশিয়ার মেয়ে স্যান্ডি অর্থাৎ ভিনদেশি এই নববধূকে দেখতে এখন জুলফিকারে বাড়িতে ভিড় করছেন এলাকাবাসী। ভাষাগত সমস্যা থাকলেও মা, ভাই-বোনদের সঙ্গে এরই মধ্যে বেশ সখ্যতা গড়ে তুলেছেন স্যান্ডি। তবে স্যান্ডির সঙ্গে সবার কথোপকথনে দোভাষীর কাজ করছেন রাজশাহীর ছেলে জুলফিকার।