সম্পর্কটা আর দশটা প্রেমের মত নয়! দুজন থাকে দুই দেশে। সামনা সামনি দেখাও হয়নি কোনদিন। ৩৪ বছর বয়সী জর্ডান প্রবাসী সোনিয়ার সাথে ৩০ বছর বয়সী কুয়েত প্রবাসী হাসানের ফেসবুকের একটি গ্রুপে পরিচয়ের পর গড়ে উঠে প্রেমের সম্পর্ক।
ভার্চুয়ালি সম্পর্ক গড়ায় গভীর প্রেমে। দিন মাস গড়িয়ে অনেকটা নিয়মমাফিক একটা সময় শুরু হয় সেই সম্পর্কে তিক্ততা। কোনভাবেই যোগাযোগ হচ্ছিলোনা প্রেমিক হাসানের সাথে সোনিয়ার।
শেষ অবধি দেশে ফিরে প্রেমিক হাসানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন পিরোজপুর জেলার পাড়েরহাট এলাকার সোনিয়া (৩৪) নামের এক নারী।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটেছে। প্রেমের স্বীকৃতি পেতে অনশনরত নারীর অভিযোগ, ‘বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সর্বস্ব ভোগ করেছেন হাসান’।
গত শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে হাসানের বাড়িতে অবস্থান নেন সোনিয়া।
অন্যদিকে, অনশনরত প্রবাসী সোনিয়া গত বছর জর্ডান থেকে দেশে ফিরেছেন। সোনিয়া জানান, ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে কুয়েত প্রবাসী হাসান নামের এক যুবকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যোগাযোগের একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
বিয়ের আশ্বাস দেয়ায় হাসানকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দিয়েছেন বলে দাবী করেন সোনিয়া ।
সোনিয়ার অভিযোগ, হাসান বিয়ের আশ্বাসে ভিডিও কলের মাধ্যমে তার সর্বস্ব ভোগ করেছে। তাদের মধ্যে সামনাসামনি দেখা হয়নি তবে অনাগত সন্তানদের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলে এবং জমি ক্রয়ের কথা বলে ৪ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছেন
সবশেষে গত রমজান মাসে বিয়ের জন্য ওই নারী দেশে ফিরলেও হাসান এখনো প্রবাসে রয়েছেন। একপর্যায়ে হাসান সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। তাই বাধ্য হয়ে তার বাড়িতে অবস্থান করছেন বলে জানান ওই নারী।
সোনিয়া আরও জানান, ঈদুল ফিতরের দুইদিন পর থেকে হাসান মোবাইল বন্ধ করে নাম্বার ব্লাকলিস্টে রেখে দেয়। যোগাযোগ করতে না পেরে হাসানের বাড়িতে এসেছি। বিয়ে না করা পর্যন্ত এই বাড়ি থেকে কোথাও যাবো না।
অপরদিকে এই বিষয়ে জানতে কুয়েত প্রবাসী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে হাসান বলেন, সোনিয়ার সঙ্গে মাত্র ১৫ দিনের সম্পর্ক, বিশ্বাস করে শুধুমাত্র কথা বলেছি। এই সুযোগে কথা বলার স্ক্রিনশট নিয়ে ব্লাকমেইল করতে শুরু করে সোনিয়া।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম নাসির জানান, পারিবারিকভাবে বিষয়টি নিষ্পত্তি না করতে পারলে পরে পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ওসি আবুল বাশার জানান, অনশনের ঘটনা জানতে পেরে সোনিয়া নামের ওই নারীকে আইনি সহায়তা দিতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি আইনগত কোনো সহায়তা না নিয়ে অবৈধভাবে অন্যের বাড়িতে প্রবেশ করে জনদুর্ভোগ তৈরি করেছেন।