গাজীপুরের শ্রীপুরে অভাবের তাড়নায় দেড় মাস বয়সী ছেলেসন্তানকে ৪২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছিলেন মা। খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ওই শিশুকে উদ্ধার করে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার গ্রামের আলফাজ উদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শিশুটি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার রেখা আক্তারের ছেলে। রেখা তার ছেলেকে নিয়ে ওই এলাকায় ভাড়া থাকেন। শিশুকে কিনে নেওয়া সাদ্দাম হোসেন নড়াইলের নরাগাতী উপজেলার কামশিয়া গ্রামের খলীলুর রহমানের ছেলে এবং আবদার এলাকায় ভাড়া থেকে স্থানীয় বিবিএস ক্যাবল কারখানায় টেকনিশিয়ান পদে চাকরি করেন তিনি।
শিশুটির মা রেখা জানান, প্রায় ৫ বছর আগে শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার (ঢালীপাড়া) গ্রামের হারেজ মিয়ার ছেলে তুহিনকে পরিবারের অমতে ভালোবেসে বিয়ে করেন। তুহিনের বাড়িতে আগের বউ থাকায় সে (তুহিন) তাকে বিয়ের পর তার বাড়িতে উঠায়নি।
একই এলাকার এক বাড়িতে তুহিন তাকে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে দেন। ৬ বা ৭ মাস আগে পেটে বাচ্চা রেখে গোপনে সৌদি চলে যায় তুহিন। সৌদি যাওয়ার পর থেকে তার (রেখা) সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় তুহিন। বিয়ের পর এটাই তাদের প্রথম সন্তান। সন্তান হওয়ার পর বিয়ের ডকুমেন্ট (কাবিননামা) না থাকায় তুহিন তার ছেলেকে অস্বীকার করেন।
তিনি আরও জানান, তুহিনর ঘরে আগের বউ থাকায় তার (তুহিন) বাবা হারেজ মিয়া আমাকে বাড়িতে উঠতে দেয়নি।
শিশুটিকে কিনে নেওয়া সাদ্দাম হোসেন জানান, আমার দশ বছরের সংসার জীবনে কোনো সন্তানাদি না হওয়ায় লালন-পালনের জন্য কিনে নেই। শিশুর মায়ের কোনো পরিচয়পত্র না থাকায় এলাকার স্থানীয় কয়েকজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ছেলে শিশুসন্তানকে ৪২ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছিলাম। পরে পুলিশের নির্দেশেই শিশুটিকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেই এবং ওই টাকা ফেরত দিয়ে দেয় আমাকে।
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু রায়হান জানান, স্থানীয় এক সংবাদ কর্মীর মাধ্যমে জানতে পারেন অভাবের তাড়নায় এক মা তার দেড় মাস বয়সী শিশু ছেলেকে বিক্রি করে দিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে টাকা ফেরত দিয়ে শিশু ছেলেকে তার মায়ের কোলে তুলে দেই।