অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে রাজধানীর বেইলি রোডের আগুনে নিহত গণমাধ্যমকর্মী অভিশ্রুতি শাস্ত্রী ওরফে বৃষ্টি খাতুনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা প্রতিবেদনে বেরিয়ে এসেছে তার বাবা সবুজ শেখ এবং মা বিউটি খাতুন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে তার পরিচয় শনাক্ত হয়।
রোববার (১০ মার্চ) এ তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ডিআইজি একেএম নাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, অভিশ্রুতি ওরফে বৃষ্টি খাতুনের বাবা-মা দাবিদার সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুনের কাছ থেকে ডিএনএ নমুন সংগ্রহ করা হয়েছিল। পাশাপাশি নিহত নারীর লাশ থেকেও ডিএনএ নমুনা নেয়া হয়। তা সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, অভিশ্রুতি বা বৃষ্টির বাবা সবুজ শেখ ও মা বিউটি খাতুন।
তিন আরো বলেন, ওই ডিএনএ প্রতিবেদনে সই করে থানায় পাঠানো হবে। লাশ বাবা-মা দাবিদারের কাছে হস্তান্তরের জন্য বলা হবে।
মেয়ের পরিচয় শনাক্তের বিষয়ে জানতে বৃষ্টির বাবা দাবিদার সবুজ শেখ জানান, ডিএনএর বিষয়ে এখনো অফিসিয়ালি তাদের কিছু জানানো হয়নি।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মারা যান বৃষ্টি খাতুন। বৃষ্টি তার বন্ধু ও সহকর্মীদের কাছে অভিশ্রুতি নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি মূলত মুসলিম পরিবারের সন্তান। কিন্তু অভিশ্রুতি নামে নিজেকে পরিচয় দেয়ার কারণে তার লাশ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। মৃত্যুর পর রমনা মন্দিরের পুরোহিত বৃষ্টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। এরপর লাশ শনাক্ত করতে নেয়া হয় ডিএনএ নমুনা। নমুনা নেয়ার ১১ দিন পর বৃষ্টির ডিএনএ’র সাথে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ মিলেছে।
অন্যদিকে সবুজ শেখ ও বিউটি খাতুন বাবা-মা দাবি করে জানান, নিহত তরুণী অভিশ্রুতি নয়, তার নাম বৃষ্টি খাতুন। বৃষ্টি তাদের সন্তান। এমন পরিস্থিতিতে পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ।
বৃষ্টির গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রাম গ্রামের পশ্চিমপাড়ায়। কলেজের সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রেও অভিশ্রুতি শাস্ত্রীর নাম বৃষ্টি খাতুন। তবে তার বন্ধু সহকর্মীরা জানতেন তার নাম অভিশ্রুতি। মৃত্যুর পর এই নাম নিয়েই জটিলতা তৈরি হয়। তার মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে রয়েছে।