অনলাইন ডেটিং অ্যাপে পরিচয় তাঁদের। সেই পরিচয় থেকে প্রেম। সেই সূত্রে ঢাকায় আসেন অস্ট্রেলিয়ার তরুণী কেইলাহ জেন সোমার্স (২৪)। কিন্তু প্রতারণার শিকার হয়ে এখন প্রায় নিঃস্ব তিনি।
কেইলাহ বলেন, এর মধ্যে তিনি বুঝতে পারেন জর্জ আসলে কোনো কাজ করেন না। এমনকি বাংলাদেশে তার ভিসার মেয়াদও অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে জর্জ খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করে। একপর্যায়ে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারির আগে জর্জ বাসা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায়। আর যাওয়ার সময় তাঁর ব্যাগে থাকা প্রায় দেড় হাজার ডলার চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি তিনি জর্জের বাসা থেকে বেরিয়ে আলাদা থাকা শুরু করেন।
কেইলাহ বলেন, ‘প্রথমে আমি ভেবেছিলাম অস্ট্রেলিয়া ফিরে যাবো। সেই ভাবনা থেকে ঢাকায় অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে যোগযোগ করি। তারা বিমানভাড়া ও যাতায়াত খরচ বাবদ আমাকে আড়াই হাজার ডলার ঋণ দেয়। কিন্তু এরপর আমি বাংলাদেশেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। বর্তমানে দূতাবাসের দেওয়া লোনের অর্থ দিয়েই আমি চলছি। ‘ তিনি আরো বলেন, ‘দূতাবাস জানিয়েছে এরপর আর কোনো ঋণ দেওয়া হবে না আমাকে। তাই হাতে থাকা অর্থ ফুরালে কি করবো? কোথায় থাকবো? জানি না। ’
কেইলাহর জানালেস, তাঁর বয়স যখন মাত্র ৪ বছর, তখনই তার বাবা-মার বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর সিডনিতে বাবার সঙ্গেই বড় হতে থাকেন কেইলাহ। বাবার আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ১৪ বছর বয়সে ঘর ছাড়েন তিনি। এরপর একেক সময় একেক ধরনের কাজ করে নিজের জীবন চালানো শুরু করেন। এভাবে জীবন চলছিল।
ঢাকায় এসে প্রতারণার শিকার হলেও বাংলাদেশের প্রকৃতি ও বাঙালির মায়ায় বাঁধা পড়েছেন কেইলাহ। তাই টুরিস্ট ভিসায় আসা কেইলাহ আর অস্ট্রেলিয়ায় না ফিরে এখানেই জীবনটা কাটিয়ে দিতে চান কেইলাহ। ঢাকায় আসার পর ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে কেইলাহ নাম নিয়েছেন ‘ফাতেমা আমুল‘। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে গেছি আমি। এ দেশের বেশিরভাগ মানুষের ধর্মটাকেই নিজের বলে মনে হয়েছে আমার। মুসলিম মেয়েদের মতো হিজাব পরাও শুরু করেছি। ’
জর্জের প্রতারণ বিচার চেয়ে কেইলাহ বলেন, ‘আমি চাই না সে আবার আমার জীবনে ফিরে আসুক। তাঁর বিচার হোক। কিন্তু অজানা-অচেনা দেশে একা একা কিছুই করার নেই আমার। ’
কেইলাহ জানালেন এরইমধ্যে কয়েকটি বাংলা শব্দও শিখে ফেলেছেন। তার মধ্যে ‘জ্বি“, ‘কাও (খাও)’, ‘এই মামা’ শব্দগুলো বলে নিজেই হাসতে শুরু করলেন তিনি। হাসতে হাসতেই মজার ছলে বললেন- ‘আমাকে একটা বাঙালি ছেলে দেখে দাও প্লিজ, বিয়ে করবো। ’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে বাংলাদেশে ব্যবহূত জর্জের মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া গেছে। পরে জর্জের বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুরে তার ভাড়া বাসার মালিক কথা বলতে রাজি হননি। তবে বাড়ির মালিকের এক আত্মীয় তাদের নাম-পরিচয় না প্রকাশের শর্তে বলেন- ‘ওই বিদেশিদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। সেজন্য জানুয়ারি মাসেই বাড়ির মালিক জর্জকে বাসা ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। তার বর্তমান অবস্থান বিষয়ে আমরা জানি না। ’
I want to marry you.
Ami biye korbo