English

25 C
Dhaka
বৃহস্পতিবার, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

অক্সিজেনের অভাবে কত কষ্টে মানুষ মারা যেতে পারে, সামনে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন: রুপা মজুমদার

- Advertisements -

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যুর যন্ত্রণার ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. কৃষ্ণা রুপা মজুমদার।

২২ জুলাই ফেসবুক লাইভে এসে ডা. কৃষ্ণা বলেন, ‘একবার একজন করোনা রোগীর সঙ্গে এসে দেখা করে যান। আমি প্রায় শখানেক রোগী আজকে দেখেছি। কোনো স্বজনের চোখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। আপনারা এই জগৎ দেখেন নাই, কিন্তু কখনো দেখবেন না সেই গ্যারান্টি ওপরওয়ালা ছাড়া কেউ বলতে পারেন না। অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্তভাবে বলছি, একেক জনের কষ্ট সহ্য করার মতো না। সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু জানি না আজকের দিনটা বাঁচবেন কি না।’

ডা. কৃষ্ণা বলেন, ‘এবার ঈদে হাসপাতালে ডিউটি করেছি। এর আগেও ঈদে ডিউটি করেছি, কিন্তু রোগীদের অবস্থা এত শোচনীয় ছিল না। সবাই মৃত্যুর যন্ত্রণায় ভুগছেন। অক্সিজেনের অভাবে কত কষ্টে একজন মানুষ মারা যেতে পারে, সামনে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। অক্সিজেন সাপ্লাই থাকার পরও নিতে পারছে না। কারণ, তাদের ফুসফুস অক্সিজেন নেওয়ার সক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে।’

ডা. কৃষ্ণা বলেন, ‘পিপিই পরে আমরা ডিউটি করি। দম বন্ধ অবস্থায় এই পোশাক পরে ডিউটি করতে হয়। যেখানে ডিউটি করি সেখানে এসি নেই। না থাকাটাই স্বাভাবিক। এই পোশাকে অক্সিজেন পাওয়া যায় না, চোখ ঝাপসা হয়ে আসে, অনেক কষ্ট, জীবনটা মনে হয় বের হয়ে যাচ্ছে। করোনার প্রথম থেকে আমরা যে সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছি, কোনো কিছুতেই সমাধান পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ঈদের পরে করোনার ভয়াবহতা হয়তো এমন করুণ পর্যায়ে পৌঁছাবে যে রোগীকে বিছানা দেওয়া সম্ভব হবে না। প্রত্যেককে অক্সিজেন দেওয়া আছে। কারো স্যাচুরেশন ৬৫, কারো ৭৫। গর্ভবতী মায়েদের কষ্ট দেখেছি। করজোড়ে অনুরোধ, এটাকে কেবল সরকার বা ফ্রন্টলাইনারদের যুদ্ধ ভাববেন না, এটা সবার যুদ্ধ। করোনাযুদ্ধ কবে শেষ হবে জানি না। এই আমি এতগুলো পজিটিভ রোগীর চিকিত্সা দিয়ে বাসায় যাব, তখন আমি কী করে পরিবারের সদস্যদের কাছে যাব? এই বাস্তবতা নিয়েই প্রত্যেক চিকিৎসক যার যার দায়িত্ব পালন করছেন। এর শেষ কোথায়? শেষ তখনই হবে যখন আপনারা সচেতন হবেন। অনুরোধ, যুদ্ধটাকে শুধু সম্মুখ সারির যোদ্ধাদের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। আপনারা হাসপাতালে ভর্তি না হলেই আমরা খুশি। যে অবস্থা দেখছি, হাসপাতালে এসেও রোগী আগামীতে আর ভর্তি হতে পারবে কি না, বলা যাচ্ছে না।’

ডা. কৃষ্ণা আরও বলেন, আমাদেরও তো পরিবার আছে, স্বজন হারানোর ভয় আছে। অনুরোধ আপনাদের কাছে, যুদ্ধটাকে শুধু সম্মুখসারির ঘাড়ে না চাপিয়ে দিয়ে, সচেতন থেকে, ঘরে থেকে, মাস্ক পরে এ যুদ্ধে সামিল হন। করোনা রোগীর সাথে হাত মেলাতে হবে না। সে অবস্থা দেখছি হাসপাতালে এসে রোগী ভর্তি হতে পারবে কী না সেটা বলা যায় না। কোনো জায়গাই হয়তো থাকবে না। মনটা খারাপ, এত কষ্ট দেখা যায় না। আপনারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে আমাদের সাহায্য করুন। দেশকে বাঁচান, নিজেদের বাঁচান। যুদ্ধে কখনো একা জয়ী হওয়া যায় না। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধে জয়ী হতে হয়। আমরা আপনাদের পাশে সবসময় আছি। আপনারাও আমাদের সহযোগিতা করুন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন