ইউক্রেনে রকেট হামলায় আক্রান্ত বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে থাকা রাজৈরের ক্যাডেট ফারজানা ইসলাম মৌ বর্তমানে নিরাপদে রয়েছেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকেই উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছিল ক্যাডেট ফারজানা ইসলাম মৌয়ের পরিবারের লোকজন। তারা বৃহস্পতিবার রাতে খবর পায়, ফারজানা নিরাপদে আছেন। স্বস্তি ফিরে আসে পরিবারটিতে।
ফারজানা ইসলাম মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা সদরের ফকরুল ইসলামের মেয়ে। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ফারজানা ২০১৫ সালে রাজৈর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ঢাকার একটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হন।
লেখাপড়া শেষ করে ইন্টার্ন করার জন্য এক বছর আগে ‘এমভি বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে করে বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন। সর্বশেষ তুরস্ক থেকে রওনা হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাজটি ইউক্রেনের অলিভিয়া বন্দরে পৌঁছায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে যুদ্ধ শুরু হওয়ায় জাহাজটি বন্দর ত্যাগ করতে পারেনি।
এ অবস্থায় বুধবার জাহাজে রকেট হামলা হয়। হামলায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার হাদিসুর নিহত হন। জাহাজে বাংলাদেশি আরো ২৮ জন ছিলেন। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে ফারজানা ফেসবুক লাইভে এসে বিপদের কথা জানিয়ে নিজেদের নিরাপদে নিয়ে নেওয়ার আকুতি জানান। তারপর রাতে তাঁদের উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়।
ফারজানার বড় ভাই ফাহাদ মাহামুদ লিমন বলেন, ‘যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে ছিলাম। ঠিকমতো ছোট বোনের সঙ্গে যোগাযোগও করতে পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে ছোট বোনের সঙ্গে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। তবে কোথায় কী অবস্থায় আছে তা জানি না। ’
ফারজানার মা মাহামুদা বিউটি বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মেয়ের চিন্তায় ঠিকমতো গোসল করতে পারিনি, খেতে পারিনি। রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারিনি। বৃহস্পতিবার রাতে মৌর সঙ্গে কথা হয়েছে। সে নিরাপদে আছে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আমার মেয়ে যেন নিরাপদে দেশে ফিরে আসতে পারে। ’
ফারজানা ইসলাম মৌ লাইভে বলেছিলেন, ‘আমি ইঞ্জিন ক্যাডেট মৌ। বাংলার সমৃদ্ধি থেকে বলছি। আমাদের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার স্যার মারা গেছেন। আমাদের শিপে বম্বিং হয়েছে। আমরা এখনো শিপের মধ্যে আছি। আমরা সবাই চাচ্ছি এখান থেকে বের হতে। আপনারা প্লিজ আমাদের কোনো একটি উপায়ে বের করুন। আমরা এখানে থাকতে চাচ্ছি না। ’