বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘মিধিলি’।
দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় এটি আঘাত হানতে পারে, এমন আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।
ঘূর্ণিঝড়টি শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে আঘাত হানতে পারে। তবে বাতাসের গতি কম থাকায় জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা কম বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগরের দক্ষিণ-পশ্চিমে যে লঘুচাপটি সৃষ্টি হয়েছিল মঙ্গলবার, সেটি গতকাল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আজ রাত ১২টা থেকে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের ১১টি জেলায় ঘূর্ণিঝড়টির আঘাত হানার শঙ্কা রয়েছে। জেলাগুলো হলো, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রাম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হলে বাতাসের গতিবেগ থাকবে ৬৪ কিলোমিটার থেকে ৮৮ কিলোমিটার। এটি সর্বোচ্চ ৯০ কিলোমিটার গতিতে উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
তিনি বলেন, গভীর নিম্নচাপটি এখন মোংলা ও পায়রা বন্দর থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এর এগিয়ে যাওয়ার গতি বিশ্লেষণ করলে বলা যেতে পারে, ঘূর্ণিঝড় হিসেবে এটি আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। যেহেতু এখন পূর্ণিমা নেই এবং বাতাসের গতিবেগও কম, সেজন্য জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কাও অনেক কম।
এনামুর রহমান বলেন, আবহাওয়ার দপ্তর থেকে বিপৎসংকেত দেওয়া হবে। সেটা সাত মাত্রায় উঠলেই যেন দ্রুততার সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেব, তারা যেন আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখে।
আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার ও নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা রাখতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের সময় প্রতিটি জেলায় নগদ টাকা, শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য ও গোখাদ্যের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমাদের জানালে ব্যবস্থা করে দেব।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বরের ভয়াল ঘূর্ণিঝড়ের কথা স্মরণ করে এনামুর রহমান আরও বলেন, ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর সিডর নামে আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। যে কারণে এ মাসটি বেদনাদায়ক। সিডরে ৩ হাজার ৬০০ লোক মারা গিয়েছিলেন। এ কারণে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষেত্রে আমরা সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করব।