এ বছরের এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ এতটাই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যে বাংলাদেশের সরকার বাধ্য হয়ে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বুধবার জানায়, আগের যেকোনো বছরের এপ্রিল মাসের চেয়ে চলতি বছরের এপ্রিল ছিল সবচেয়ে উষ্ণ।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপপ্রবাহ দীর্ঘ, ঘন ঘন ও আরও তীব্র হচ্ছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. আবুল কালাম মল্লিক এএফপিকে বলেন, ‘এ বছর এপ্রিলে দেশের ৮০ শতাংশ জায়গায় তাপপ্রবাহ ছিল। এর আগে আমরা এমন অবিচ্ছিন্ন এবং বিস্তৃত তাপপ্রবাহ দেখিনি।’
তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালে রেকর্ড রাখা শুরু করার পর থেকে গরম ও তাপপ্রবাহের বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে এই এপ্রিল ছিল এ পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ এপ্রিল মাস।
তিনি জানান, ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছর যাবত এপ্রিল মাসের দৈনিক সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ছিল ৩৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু চলতি বছরের এপ্রিলে বাংলাদেশের বিভিন্ন আবহাওয়া স্টেশনে এ তাপমাত্রার চেয়েও দুই থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি দৈনিক সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র সেলিম রায়হান এএফপিকে জানিয়েছেন, গত ১০ দিনে হিট স্ট্রোকে অন্তত ১১ জন মারা গেছেন।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় গত কয়েকদিন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে বাংলাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে জনজীবনে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
মল্লিক জানান, বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগে সাধারণত এপ্রিল মাসে ঝড়-বৃষ্টি হয়ে থাকে। এ বছর হয়নি। এ কারণে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এপ্রিল মাসে গড়ে ১৩০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কিন্তু এই এপ্রিলে গড়ে এক মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি জানান, আগের যেকোনো বছরের চেয়ে এবারের এপ্রিলে এটিই সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত কি না, সেটিও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।