English

19 C
Dhaka
বুধবার, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪
- Advertisement -

সৌন্দর্যের লীলাভূমি বিছানাকান্দি

- Advertisements -

নাসিম রুমি: বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হরেক রকম সবুজ-সতেজ প্রান্তর, ঠিক যেমনটি সিলেটের বিছানাকান্দি। শহরের ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি থেকে বিরতি নিতে আমরা সবসময় ছুটে যাই চিরসবুজ প্রকৃতির কাছে, একটু শীতল ছোঁয়া পেতে। এরকমই এক সতেজ জল প্রান্তর বাংলার অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সিলেটের বিছানাকান্দি । প্রকৃতিপ্রেমী অনেকের কাছেই এই জায়গাটি বেশ প্রিয়। যারা এখনও সিলেটের বিছানাকান্দি যাইনি, তাদের জন্যই আজকে তুলে ধরব লীলাভূমির রুপচিত্র।

বিছানাকান্দি বাংলাদেশের সিলেট জেলা হতে ৬০ কিলোমিটার উত্তর – পূর্বে অবস্থিত গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম। সিলেট শহরের বিমানবন্দর রোড ধরে বিছানাকান্দির পথ। দু’পাশের সবুজ চা বাগান পেছনে ফেলে আপনাকে যেতে হবে গন্তব্যে। এই পথ ধরে গেলে মনে হবে, পুরো পৃথিবীটাই যেন সবুজের রাজ্য। আর আঁকা বাঁকা পাহাড়ি উঁচুনিচু পথটাকে কেউ বড় অজগর বলেও ভুল করতে পারেন। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক ধরে সালুটিকর বাজারের ডানদিকে গোয়াইনঘাট লিঙ্ক রোড হয়ে দেড়ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যাবে বিছানাকান্দি। তবে সিএনজি নিয়ে গেলে যাওয়ার খরচ অনেকটাই কমে যাবে। হাদারপাড় বাজার পর্যন্ত ৮০ টাকা ভাড়া দিয়ে সহজেই চলে যাওয়া যায়। শুরুতেই জানিয়ে রাখি, বিছানাকান্দি তে নির্দিষ্ট কোন থাকার জায়গা নেই, তবে সিলেট শহরে আপনি চাইলে হোটেল ভাড়া করে থাকতে পারেন। তবে বিস্তৃত মহাসড়কের কারণে সিলেটে দিনে গিয়ে দিনেই ঘুরে আসা যায়।

কেমন দেখতে সিলেটের বিছানাকান্দি
গ্রামটি মুলত একটি কোয়েরি, যেখানকার নদী থেকে পাথর সংগ্রহ করা হয়। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা খাসিয়া পাহাড়ের অংশগুলো এখানে এসে মিলিত হয়েছে। খাসিয়া পাহাড় থেকে নেমেছে এক ঝর্ণা, যার পানিই সুন্দর এক হ্রদে রূপ নিয়েছে। এই হ্রদটি মিলিত হয়েছে পিয়াইন নদীর সাথে। ঝর্ণার পানির সাথে হ্রদে নেমে আসে শিলা-পাথর যেগুলো একদম প্রাকৃতিক।

হাদারপাড় বাজারের পাশেই আছে ঘাট খেয়াঘাট যেখান থেকে নৌকা রিজার্ভ করে যাওয়া যায় বিছানাকান্দি। দর কষাকষি করে ৫০০ টাকার মধ্যে নৌকা রিজার্ভ করা যায়। যদিও পর্যটকদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া হাঁকানোর নজির এখানকার মাঝিদের আছে। তাই আগে থেকে ভাড়া ঠিক করে নেয়া ভলো।

নৌকা ভ্রমনের কারণে দেখা মিলবে দু’পাশের সবুজ গ্রামের প্রতিচ্ছবি। সাথে দেখা মিলবে সুদূরে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘালয় পাহাড়ের। নৌকা যতই আগাবে সামনের দিকে আপনি ততই অবাক হতে বাধ্য। নদীর ধার ঘেঁষে মাঝে মাঝে উঁচু করে স্তূপ আকারে জমিয়ে রাখা হয়েছে সাদা, কালো ও বাদামি পাথরের চাঁই। মনে হবে সবুজ পাহাড়ের কোলে আরেক সাদা পাহাড়।

নৌকায় প্রায় পনের মিনিট ভ্রমণের পরই দেখা মিলবে বিছানাকান্দির। সীমান্তের ওপার থেকে বয়ে আসা স্বচ্ছ জলধারা বড় বড় পাথরের ফাঁকে আপনাকে নিয়ে যাবে মায়ার স্রোতে। পাথরের বুকে শীতলের আলিঙ্গনে কিছুক্ষণের জন্য হলেও ভুলে যেতে পারবেন শহরের মায়া। স্রোতের মধ্যে ডুবন্ত পাথরের উপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করতে পারবেন অন্য এক রাজ্য। যেখানে এপারের প্রকৃতি ওপাড়ের পাহাড়ের সাথে যেন মিতালী করছে গভীর মমতায়। আকাশে ভাসমান মেঘের নেই সীমানা। সেই মেঘেদের পাহাড়ের কোলে ভেসে বেড়ানোর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন এখানে। সেই সাথে হিম শীতল পানিতে নিজের শরীরের সাথে ভিজবে আপনার মনও। বেশ কয়েক বছর ধরে এখানে বেড়েছে পর্যটকের আনাগোনা। কয়েক বছর আগেও স্থানটি লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকলেও বর্তমানে এটি বেশ পরিচিত ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে। বিশেষ করে দলবল নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি উপযুক্ত স্থান এই বিছানা কান্দি।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ

আল কোরআন ও আল হাদিস

- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন