ভলকানিক গ্রামগুলোতে হাঁটতে হাঁটতে মনে পড়ে যাবে বহু শতাব্দী আগের সেই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট এই দ্বীপের ইতিহাসের কথা। চারিপাশে এজিয়ান সমুদ্র। শুধু পর্বতগুলোর শরীর জুড়ে গড়ে উঠেছে সাদা আর নীল রঙের এই ঘর বাড়ি এবং রিসোর্ট রেস্টুরেন্টগুলো। সন্ধ্যা যখন গড়িয়ে পড়ে তখন এর সূর্যাস্তের মোহনীয় রূপ অভিভূত করে তোলে। এই সান্তরিনী যেন এক স্বর্গদ্বীপ।
গ্রিক সাম্রাজ্যের সান্তরিনি দ্বীপে এজিয়ান সমুদ্রের মধ্যখানে চাঁদের মতো বাঁকা এই দ্বীপটি পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর একটি দ্বীপ। পুরো দ্বীপটির প্রতিটি ঘরবাড়ি সাদা আর নীল রঙের, আর এটিই এই দ্বীপের বৈশিষ্ট্য। এই সুন্দর দ্বীপটির পূর্বের ইতিহাস খুবই কষ্টের, কয়েক হাজার বছর আগে সমুদ্রের জ্বালামুখ থেকে আসা আগ্নেয়গিরির বিশাল অগ্ন্যুৎপাতের ফলে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল পূর্বের জনবসতি এবং দ্বীপের বিশাল অংশ, আর তারই ধ্বংসাবশেষ হিসেবে রয়ে গেছে বাঁকা চাঁদের মত একটি খণ্ড। যা আজকের সান্তরিনি দ্বীপ হিসেবে পরিচিত।
এই দ্বীপের আনাচে-কানাচে রয়েছে কালো, লাল এবং সাদা লাভা নুড়ি দ্বারা তৈরি দেওয়াল, রাস্তা। এখানে প্রত্যেকটি স্থানে ওইয়ার হোয়াইট ওয়াশড, কিউবিফর্ম বাড়িগুলো একটি ডুবো জলছবির মত আঁকড়ে আছে সমুদ্রের তলদেশ থেকে বেরিয়ে আসা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের বিধ্বস্ত হওয়া সেই ইতিহাস। দু‘বার আমি গিয়েছিলাম গ্রিসের এই মনকাড়া অপূর্ব দ্বীপে! আমার দেখা পৃথিবীর অনেকগুলো দ্বীপের মধ্যে একটি অসাধারণ দ্বীপ যা আমাকে এখনো বারবার টেনে নিয়ে যায়। এর জীবন চিত্র ও প্রাকৃতিক রূপ যেন সাদা সাদা স্বর্গপুরীতে রূপায়িত করেছে দ্বীপটিকে।
এই অসাধারণ দ্বীপটির কানায়-কানায় রয়েছে প্রচুর আকর্ষণ এবং ক্রিয়াকলাপ, নির্মলতা এবং বিনোদনের সংমিশ্রণ এবং একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা। যা এখনো বহু বছর পরেও আমি যখন চোখ বন্ধ করি তখন আমার আত্মাকে অসাধারণ অনুভূতি দিয়ে যায় বারবার। বারবার মনে হয় যদি আবার দেখা হয় কোন দিন এই দ্বীপ শহরের প্রতিটি স্থানের সাথে, তবে মন্দ হবে না দ্বিতীয়বার আবার তাকে নতুন করে দেখে নিতে।
লেখক : বাংলাদেশের পতাকাবাহী প্রথম বিশ্বজয়ী, ১৫৫ দেশ ভ্রমণকারী।