নাসিম রুমি: শৈশবকাল থেকেই আমি সর্বদা নির্জন স্থানে, নির্জন সমুদ্রে, নির্জন পাহাড় কিংবা ঝর্নার সান্নিধ্য ভালোলাগে। তাই আমি যখনি কোন স্থানে ভ্রমনে যাই, সবচেয়ে আগে চিন্তা করি কখন, সেই পর্যটন স্থানটি নির্জনতা পাবো। কলাহল মুক্ত পাব? তাই আমি অফ সিজনেই সিংহভাগ দেশে এবং বিদেশে সফরে বের হই।
শুধু নির্জনতার কারণে এবং শুধু সুখ-শান্তির আশায়। আমার নব্বই দশকের শেষলগ্ন থেকে কতবার কলকাতায় যাওয়া হয়েছে তার সঠিক হিসাব আমার কাছে নেই। ভারতের বিখ্যাত পর্যটন স্থানগুলির সিংহভাগ আমার গত ২০ বছরে ভ্রমন করা হয়েছে।
কাশ্মীর টু কণ্যাকুমারী আমার একাধিকবার ভ্রমন হয়েছে। ভারতের বিখ্যাত পর্যটনগুলির ভ্রমনে গেলে, আমাকে প্রথমে কলকাতায় দু’দিন অবস্থান করতে হয়। মান্দারমানিতে রাত্রি যাপনের জন্য অসংখ্য হোটেল রয়েছে। আমি এবং সারোয়ার ভাই প্রথমে বেলাভ’মি রির্সোটে ছিলাম একদিন। উভয়ে ফুলের বাগিচা খুব পছন্দ করি, তাই পরের দিন বাগিচা ঘেরা অপূর্ব সুন্দর লিভ-সী ভিউ রিসোর্ট এ অবস্থান করি। সত্যিই এই রিসোটের সৌন্দর্য অপূর্ব। আমাদের কক্ষের বারান্দা থেকে মান্দারমনির নির্জন সৈকত দেখা যায়।
মন্দারমনিতে বিদ্যুৎ লাইন সংযোগ হয়নি। তবে পর্যটকদের জন্য কোন অসুবিধা নেই। প্রতিটি হোটেল, রির্সোটে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। তাই মান্দারমনিতে হোটেল ও রির্সোটের ভাড়া অধিক। পশ্চিম বঙ্গের একাধিক সমুদ্র সৈকত রয়েছে। এর মধ্যে দিঘা, শঙ্করপুর, জনপুট, তালসারি উদয়পুর এবং মন্দারমানি অন্যতম। এইসব সৈকতে ভ্রমনে গেলে বাসে কিংবা ট্রেনে মাত্র ৪/৫ ঘন্টা সময় লাগে। তবে সবচেয়ে নির্জন সৈকত হচ্ছে মন্দারমানি। এ পর্যন্ত আমি চারবার মন্দারমানি ভ্রমন করেছি।
শুধু নির্জন সৈকত, ঝাউবনের সারি আর প্রতিটি হোটেল, মোটেল ও অপূর্ব সুন্দর বাগিচার কারণে। হানিমুন কিংবা আপনজনদের নিয়ে অন্তত দুইটা দিন নির্জন মন্দারমানি সফর করলে মনটা অবশ্যই উৎফল্ল হব। গত ১৯ জানুয়ারী ২০২০ সালে আমি মন্দারমানিতে ভ্রমনে গিয়েছিলাম। আমার সফর সঙ্গী ছিল কেরানীগঞ্জের বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং কেরানীগঞ্জের ব্রাদার্স পেপার এন্ড বোর্ড মিলস লিঃ এর চেয়ারম্যান মোঃ সারোয়ার হোসেন।
কলকাতা হাওরা রেল স্টেশন থেকে সকাল ১১.১৫ মিনিটে দুরন্ত এক্সপ্রেসে চেপে প্রথমে দিঘা স্টেশনে যাই মাত্র ৩ ঘন্টায়। সেখান থেকে প্রাইভেট গাড়িতে চেপে ১.৩০ মিনিটে মন্দারমানি সী-বীচে পৌঁছি। পর্যটক বন্ধুরা যদি কখনো কলকাতায় যাওয়ায় হয়, তবে অবশ্যই মন্দারমানি সী-বীচে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ষ্পষ্টভাবে বলছি মন্দারমানি সী-বীচ আপনাকে হতাশ করবেনা। উল্লেখ্য মন্দারমানির সবচেয়ে দামি হোটেল হচ্ছে রোজ ভ্যালী রির্সোট। ভাড়া ৩০০০ হাজার থেকে শুরু করে ১৬০০০ হাজার টাকা।