English

28 C
Dhaka
মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪
- Advertisement -

কাপ্তাই ওয়াগ্গাছড়া চা-বাগানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মুগ্ধ করবে

- Advertisements -

চট্টগ্রামের বৃহত্তম ও মনোমুগ্ধকর চা বাগান হলো ওয়াগ্গাছড়া চা এস্টেট। পাহাড়ী এলাকায় কর্ণফুলি নদীর তীরে এ চা বাগান অবস্থিত। কাদেরী টি এস্টেট পরিচালিত এই চা বাগান পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত মনোরম ও উপভোগ্য। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পর্যটকদের মন জড়িয়ে দেয়। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গাছড়া। রাঙ্গামাটি থেকে জল ও স্থল উভয় পথেই কাপ্তাই ওয়াগ্গাছড়া চা এস্টেট এ যাওয়া যায়।

ওয়াগ্গা চা বাগান, প্রকৃতির প্রায় সব রূপ-রং যেন এখানে এসে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। বিশাল এই সবুজের ভীড় কার না ভালো লাগবে! বিকেলের ফুরফুরে বাতাসের সাথে এমন সবুজে ঘেরা স্থানে কাটানো মুহূর্ত অনেকটা আলাদা হয়েই স্মরণ হবে পরবর্তী সময়গুলোতে। শুধু স্থানীয়দের ভিড়ই না, জায়গাটি অন্যান্য অঞ্চলের পর্যটকদেরও আকর্ষণে করেছে। তাই, সারা বছর অসংখ্য বিদেশি পর্যটকদেরও আসা-যাওয়া চলতে থাকে জায়গাটিতে।

চা-বাগানটি পর্যটকদের জন্য অত্যন্ত মনোরম ও উপভোগ্য দর্শনীয় এক স্থান। সবুজ চা এর সমারোহে যে কোনো মানুষ গেলেই সবুজের মাঝে নিজেকে হারিয়ে যেতে চাইবে। তবে এটি বেশ পুরনো চা বাগান হলেও তেমন প্রচারণা না থাকায় সবুজ পাহাড়ের বুকে যে এমন চায়ের বাগান রয়েছে তা জানেনই না অনেকেই।

কাপ্তাই উপজেলা সদরের কাছে কর্ণফুলী নদীর তীরে ওয়াগ্গা ইউনিয়নের এ চা-বাগানটির অবস্থান। ১৮৮৬ সালে ব্রিটিশ নাগরিক মিস্টার ডরিন-এর নেতৃত্বে কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরে ওয়াগ্গাছড়া এলাকায় চা বাগান সৃজনের কাজ শুরু হয়। প্রায় ৫০ বছর সময়কাল চা বাগানের কর্তৃত্ব ব্রিটিশদের হাতে থাকার পর এটির হাত বদলের ধারাবাহিকতায় চা বাগানের মালিকানা লাভ করেন নুরুল হুদা কাদেরী। বর্তমানে কাদেরী পরিবারের ব্যবস্থাপনায় ওয়াগ্গা টি লিমিটেড নাম দিয়ে চা শিল্পের পরিচালনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ টি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নতুন উদ্ভাবিত প্রায় সব কয়টি জাতই এ চা বাগানে চাষ করা হচ্ছে। ৩৭০ হেক্টর আয়তনের এ বাগানে বাগান কর্তৃপক্ষের নিজস্ব একটি ফ্যাক্টরিও রয়েছে। যাতে প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হচ্ছে।

চা বাগানে যেতে হলে চট্টগ্রামের বদ্দারহাট হতে সড়ক পরিবহন যোগে কাপ্তাই উপজেলায় যেতে হবে। কাপ্তাই যাওয়ার আগে বড়ইছড়ি উপজেলা হেড কোয়ার্টারে নামতে হবে। এখানে নেমে ওয়াগ্গাছড়া চা এস্টেট এর নৌকা যোগে কর্ণফুলী নদী পার হয়ে ওয়াগ্গাছড়া চা বাগান যেতে হবে। আর কেউ যদি রাঙামাটি শহর যেতে চান, তাহলে রাঙামাটি শহর থেকে কাউখালী উপজেলার ঘাগড়াবাজার হয়েই সড়কযোগে কাপ্তাই পৌঁছাতে পারবে। তবে ব্যক্তি মালিকানাধীন বাগান হওয়ায় এক্ষেত্রে অবশ্য চা বাগানে যেতে হলে সংশ্লিষ্টদের অনুমতির বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এ বাগানে যারা কাজ করেন থাকেন তাদের সবাই স্থানীয় বাসিন্দা। এর মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানুষও জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ৩৭০ হেক্টর আয়তনের চা বাগানটি বেশ কয়েকটি পাহাড়ে বিভক্ত। চা বাগানের ভেতর দিয়ে স্থানীয় একটি মারমাপাড়ায় যাওয়া যায়। উজানছড়ি পাড়া নামের এই পাহাড়ি আদামে মারমা জনগোষ্ঠীর বসবাস। তারা অনেকটাই সহজসরল জীবনযাপন করেন। যা পাড়ার পরিবেশ দেখেই যে কেউ মুহূর্ততের মাঝেই অনুভব করতে পারবে।

কথা হয় কাপ্তাই ওয়াগগাছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিনুর রশীদ কাদেরীর সাথে তিনি জানান, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার ওয়াগগাছড়া চা বাগান পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের মধ্যে একটি সুপরিচিত এবং সুনামধন্য চা বাগান। যেখানে প্রাকৃতিক অপরূপ পরিবেশে গড়ে উঠা চা বাগানটিতে আসলে যে কারো মন প্রাণ জুড়ে যাবে।

তিনি আরো জানান, কাপ্তাই ওয়াগগাছড়া চা বাগানে অসহায় হতদরিদ্র অনেক বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরির পাশাপাশি দেশের চা উৎপাদন ও অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

এদিকে কাপ্তাই ওয়াগগা চা বাগানে ঘুরতে আসা রাজন বড়ুয়া জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই এই চা বাগানে আসেন। তিনি বলেন, অপরূপ সৌন্দর্য সৃষ্টি করা এই চা বাগানটিতে আসলে মন প্রফুল্ল হয়ে যায়।

কাপ্তাই ওয়াগগাছড়া চা বাগানে ঘুরতে আসা গনমাধ্যমকর্মী আরিফ রায়হান জানান, কাপ্তাইয়ে বিভিন্ন সময়েই ঘুরতে আসি। আমাদের চট্টগ্রাম শহর থেকে কাপ্তাই অনেকটা কাছে। তবে প্রাকৃতিক অপরূপ পরিবেশে গড়ে উঠা চা বাগানটিতে আসলে যে কারো মন প্রাণ জুড়ে যাবে। চা বাগানের যেদিকে তাকাবেন সেদিকেই সবুজের সমারোহ। চা বাগানের পরিবেশ আমাদের মুগ্ধ করেছে।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন