এস এম আজাদ হোসেন: আজ বিশ্ব পথচারি দিবস। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৭ আগস্ট সড়কে এক বিয়োগান্ত ঘটনার পর প্রতি বছর ১৭ আগস্ট বিশ্বের মানুষদের সড়কে চলাচলে সচেতন করতে আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
প্রতিবছর রোডক্রাশে বাংলাদেশে যত লোক নিহত হয় তার প্রায় ৫০ শতাংশই পথচারি।এর মানে হল সড়কে কিভাবে চলতে হয় তা আমরা অনেকেই জানি না। একটু সময় বাঁচাতে পথচারিরা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করে চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পারাপার হন।ফলে অনেক সময় পথচারী ও গাড়ির সংঘর্ষে ঘটে মারাত্মক দুর্ঘটনা।পথচারিরা অনেক সময় ট্রাফিক আইন মেনে চলেন না।
তাড়াহুড়ো করে, সিগন্যাল অমান্য করে এবং ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশনা মানতে চান না।পারাপারের জন্য নির্ধারিত জেব্রাক্রসিং,আন্ডারপাস বা ফুটওভার ব্রীজ ব্যবহার না করে যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হন। অনেক পথচারী রাস্তা পারাপার হওয়ার সময় মোবাইল ফোনে কথা বলেন, হেডফোন ব্যবহার করেন, বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হন এবং সিগন্যাল মানেন না। এসব কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে।
পথচারীদের হাঁটার নিরাপদ জায়গা হল ফুটপাত।নিয়ম থাকা সত্ত্বেও এর প্রয়োগ কমই দেখা যায়। কারণ ফুটপাত থাকে হকারদের দখলে। ফলে পথচারীরা ফুটপাত ব্যবহার না করতে পেরে রাস্তার মধ্য দিয়ে চলাচল করেন। আবার অনেকে সময় বাঁচানোর কথা ভেবে ফুটপাত ব্যবহার করের না।
ফলে সৃষ্টি হয় যানজট এবং ঘটে যায় মারাত্মক দুর্ঘটনা।অনেকে জানেন না ফুটপাতের কোন দিক দিয়ে হাঁটতে হবে।নিয়ম হল রাস্তার ফুটপাতের ডান পাশ দিয়ে হাটা। কারণ,আমাদের দেশে গাড়ি রাস্তার বাম পাশ দিয়ে চলে।তাই রাস্তার বাম পাশ দিয়ে হাটলে গাড়ির গতিবিধি লক্ষ্য করা যায় না।যেকোন সময় পেছন থেকে গাড়ি এসে মেরে দিতে পারে।আর ডান পাশ দিয়ে হাটলে গাড়ির গতি বিধি লক্ষ্য করা যায় এবং নিজেকে রক্ষা করা যায়।তবে উঁচু ফুটপাত থাকলে রাস্তার ডান বা বাম যেকোন পাশ দিয়ে হাটা যাবে।কিন্তু যেখানে উঁচু ফুটপাত নেই সেখানে জীবন বাঁচাতে অবশ্যই রাস্তার ডান পাশ দিয়ে হাঁটতে হবে।
তাহলে বিষয়টি দাড়ালো-
১) মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হব না।
২) বন্ধুর সঙ্গে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হবনা।
৩) কানে হেডফোন লাগিয়ে অন্যমনস্ক হয়ে রাস্তা পারাপার হব না।
৪) চলন্ত গাড়ির সামনে দিয়ে দৌড়ে বা হাত দেখিয়ে রাস্তা পার হবনা।
৫) যত্রতত্র রাস্তা পার হব না,রাস্তা পারাপারে জেব্রাক্রসিং,ফুটওভার ব্রীজ,আন্ডারপাস এগুলো ব্যবহার করি।
৬) যেখানে রাস্তা পারাপারে জেব্রাক্রসিং,ফুটওভার ব্রীজ,আন্ডারপাস এগুলো নেই সেখানে ডানে-বামে গাড়ির নিরাপদ দুরত্ব দেখে রাস্তা পার হব।
৭) নির্দিষ্ট লেন মেনে বাই সাইকেল ও মোটর সাইকেল চালাবো।
আমরা সম্মিলিতভাবে এই নিয়মগুলি মেনে চললে দেশ থেকে রোড ক্রাশ ও প্রায় ৫০ শতাংশ হতাহত কমে যাবে।
এস এম আজাদ হোসেন
লেখক-সাংবাদিক ও সমাজকর্মী।
মহাসচিব-নিরাপদ সড়ক চাই