জহিরুল ইসলাম মিশু,সিলেট ব্যুরো: সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো কার্গো ফ্লাইট চালু হচ্ছে রোববার। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পর এই প্রথম আরএ-থ্রি প্রটোকল অনুসরণ করে চালু হচ্ছে কোনো কার্গো টার্মিনাল।কার্গো ফ্লাইটের উদ্বোধন উপলক্ষে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় ওসমানী বিমানবন্দরে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, সচিব নাসরীন জাহান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া এবং মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এরপর সন্ধ্যা ৭টা ১০মিনিটে ফ্লাইট স্পেনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আজ বাণিজ্য এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন।আজ উদ্বোধনী দিনে ঢাকার এমজিএইচ গ্রুপ, অরিজিন সলিউশন্সসহ আরেকটি কোম্পানি তাদের পণ্য রপ্তানি করছে। এরই মধ্যে এসব কোম্পানির মালামাল ট্রাকযোগে ওসমানী বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে গেছে। ওসমানী বিমানবন্দরের এই টার্মিনালের প্রাথমিক ধারণক্ষমতা ১০০ টন। এ বিমানবন্দরের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক বছর আগে এ বিমানবন্দরে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে এক্সপোর্ট কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ হয়। এর সুবিধাদির মধ্যে রয়েছে- অত্যাধুনিক এক্সপ্লোসিভ ডিটেকশন সিস্টেম (ইডিএস), ডুয়েল ভিউ স্ক্যানিং মেশিন ও এক্সপ্লোসিভ ট্রেস ডিটেকশন মেশিন।
বিমানের একটি সূত্র জানায়, এক্সপোর্ট কার্গো নির্মাণের পর এ বিমানবন্দর থেকে দুটি শিপম্যান্ট হয়েছে। এর মাধ্যমে মার্ক স্পেনসারের ২১০০ কেজির একটি শিপম্যান্ট যুক্তরাজ্যে গেছে। এ বিমানবন্দরে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে পণ্য রপ্তানির সার্টিফিকেশন রয়েছে। বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল হওয়ায় বাংলাদেশের রপ্তানি যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, সেজন্য প্রথম উদ্যোগ হিসেবে ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কার্গো সেবা চালু করছে বলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের চাহিদা দীর্ঘদিনের। তবে এসব দেশে রপ্তানির ক্ষেত্রে কঠোর মান নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা প্রটোকলের কারণে এতদিন একমাত্র ভরসা ছিল ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। সেখানেও বর্তমানে অতিরিক্ত চাপ। এমন পরিপ্রেক্ষিতে বিকল্প রপ্তানি পয়েন্ট হিসেবে সামনে এসেছে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন কার্গো টার্মিনাল। প্রাথমিকভাবে ১০০ টন ধারণক্ষমতার এই টার্মিনাল ২০২২ সালেই কার্গো পরিবহনের জন্য উপযুক্ত স্বীকৃতি পেলেও তখন ঢাকায় চাপ কম থাকায় সিলেটমুখী হননি রপ্তানিকারকরা। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে।
ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ জানান, এই প্রথম সিলেট থেকে কোন কার্গো ফ্লাইট ইউরোপে যাচ্ছে। আগামীতে ফ্লাইটের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশা রাখি।আগে যাত্রীবাহী বিমানে করে কিছু পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়েছে। কার্গো ফ্লাইট উদ্বোধন উপলক্ষে ওই দিন বিমানবন্দরে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে।