গত দুই সাপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমন আবারও বাড়ছে।এরই ধারাবাহিকতায় সিলেটেও বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এতে করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসন্ন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অনেকেই। বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্তের হার তিন শতাংশের নিচে নেমে ছিল।বর্তমানে সংক্রমনের হার বাড়ছে।গত ৮ মার্চ শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ।আর ৯ মার্চ থেকে শনাক্তের হার ৫ শতাংশের উপরে উঠছে।
রোববার সিলেটে নমুনা পরিক্ষায় ৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। যা গত ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।রবিবার পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ১৬ হাজার ৪৮২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সোমবার সরেজমিন সিলেট নগরীতে ঘুরে দেখা গেছে,বেশিরভাগ মানুষই সামাজিক দূরত্ব বজায়ের সরকার ঘোষিত কোন দিক-নির্দেশনা মানছেন না।এমনকি মাস্ক পরারও অনীহা দেখা গেছে অনেকের মাঝে।
সিলেট করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রোববার ১৪ মার্চ সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪০ জন রোগী ভর্তি আছেন।মার্চের শুরুতেই ১৫ জনের মতো রোগী ছিলেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়। এদিকে যুক্তরাজ্যের করোনাভাইরাস এর নতুন ধরন (স্ট্রেইন) সিলেটের শনাক্ত হওয়ায় বাড়ছে আতঙ্কও।
বর্তমানে সিলেটে যুক্তরাজ্য থেকে সাপ্তাহে দুটি ফ্লাইট সরাসরি সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আবতরন করে।সিলেটের সাথে যুক্তরাজ্যের সরাসরি ফ্লাইট চালু থাকায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। টিকা নেওয়ার পরও অনেকে করোনা আক্রান্ত হওয়ায় মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন শীতকালে দেশে অন্যান্য ভাইরাস সক্রিয় থাকায় করোনা সংক্রমণ খুব বেশি হয়নি। তবে গরম চলে এলে করোনা সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে। সিলেটে গত বছরের ৫ এপ্রিল প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। তবে এসময় রোগী শনাক্তের হার ছিল কম। গত বছরের মে মাসে মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত দৈনিক ১৬০ থেকে ২০০ জন রোগী শনাক্ত হন। এরপর থেকে শনাক্তের হার কমতে শুরু করে। এ বছরের মার্চ মাস থেকে সিলেটে আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে আবারও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তথ্যমতে ফেব্রুয়ারি মাসের সিলেটে করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৯২ জন। মার্চ মাসে ১৩ দিনে রবিবার সকাল এগারোটা পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৬০ জন রোগী।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা.আনিসুর রহমান জানান, শীতের সময় ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে-এ,ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস-বি সহ এরকম কয়েকটা ভাইরাস সক্রিয় থাকে। ফলে অনেকেই এ সময় জ্বর- সর্দিতে আক্রান্ত হোন।একটি ভাইরাস যখন শরীরে থাকে তখন অন্য ভাইরাস শরীরে সহজে ঢুকতে পারে না।
ফলে শীতে করোনার প্রকোপ অন্যান্য দেশের চেয়েও বাংলাদেশ কম ছিল।তবে শীত মৌসুম চলে যাওয়ার কারণে অন্যান্য ভাইরাসগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়ায় এখন করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে পারে। তিনি আরো বলেন, বিগত কিছুদিন থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ অনেকাংশেই বাড়ছে, তাই আমাদেরকে এখন আরো সতর্ক থাকতে হবে মাক্স পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।