জহিরুল ইসলাম মিশু: সিলেটে আবারো বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে সিলেটে গত বৃহস্পতিবার থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। অব্যাহত ভারী বৃষ্টি ও সেইসাথে পাহাড়ি ঢল অব্যাহতের কারনে ক্রমেই বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে মোড় নিচ্ছে সুরমা, কুশিয়ারার পানি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, গত তিনদিন ধরেই সুরমা, কুশিয়ারাসহ সিলেটের বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে চলেছে। এ ছাড়া বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
পাউবোর সিলেট অফিসের তথ্য মতে, গত শুক্রবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর পানি সিলেট পয়েন্টে ছিল ৯.৪৬ মিটার। রোববার দুপুর ১২টায় পানিসীমা দাঁড়ায় ৯.৯৩ মিটারে। অর্থাৎ ৪৮ ঘন্টায় পানি বেড়েছে ৪৭ সেন্টিমিটার।
সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে শুক্রবার ছিল ১১.৯৬ মিটার ও রবিবার দুপুরে হয় ১২.৩৫ মিটার।
এদিকে কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে গত শুক্রবার সকাল ১০ টায় ছিল ১১.৪৩ মিটার ও রোববার সকাল ১০ টায় দাঁড়ায় ১২.০৮ মিটারে। এ নদীতে কুশিয়ারা নদীর পানি আমলশিদ পয়েন্টে গত শুক্রবার দুপুরে ছিল ১৩.৬৫ মিটার। রোববার দুপুরে হয়েছে ১৪.৩০ মিটার।
শেরপুর পয়েন্টে ও কুশিয়ারার পানি বেড়েছে। এখানে গত শুক্রবার দুপুরে পানিসীমা ছিল ৭.৩৮ মিটার রবিবার দুপুরে হয়েছে ৭.৬৭ মিটার।
গত মাসে ভয়াবহ বন্যার ক্ষতি এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি সিলেট নগর ও বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দারা। এরমধ্যে নতুন বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিলে আবারো কঠিন অবস্থায় পড়তে হবে বলে জানান স্থানীয়রা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৌসুমি বায়ু প্রবাহিত হওয়ায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এই বৃষ্টি দুই থেকে তিন দিন স্থায়ী হবে। তবে মাসের শুরু থেকে হওয়া বৃষ্টির পরিমাণ প্রতিদিন কিছুটা কমতে শুরু করেছে। এরপরই বর্ষার স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে।
এদিকে আগামী ১০ জুনের পর থেকে ভারতের মেঘালয় ও আসামে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এতে করে পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনটা হলে সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট অফিস।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ জানান, আগামী ১২ থেকে ১৪ জুনের মধ্যে ভারতের মেঘালয় ও আসামে বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে সিলেট অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। সে সময় বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। মূল চিন্তার কারণ পাহাড়ি ঢল। এরই মধ্যে সিলেটে সম্প্রতি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত নদ-নদীর বাঁধগুলো মেরামত ও সংস্কারের কাজ করা শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ১২ থেকে ১৪ জুনের আগেই মেরামত কাজ শেষ হয়ে যাবে।