English

24 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

তামাবিল স্থলবন্দরে ৬ দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ: প্রতিদিন ৫০ লক্ষ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

- Advertisements -

জহিরুল ইসলাম: সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে অটো এসএমএস সফটওয়্যার চালুর প্রতিবাদে ৬ দিন ধরে পণ্য আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। সফটওয়্যারভিত্তিক এ কার্যক্রম সময়সাপেক্ষ হওয়ায় পুরোনো পদ্ধতিতে ওজন মেপে পণ্যবাহী যানবাহন পারাপার চালুর দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, দু’দেশের স্থলবন্দরে অটোমেশন পদ্ধতি চালু না হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ওপারে ভারতের ডাউকিতে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পণ্য পরিমাপ করে এদেশে এনে অটোমেশনে পরিমাপের পর নানা বিড়ম্বনায় পড়ার কথাও জানান ব্যবসায়ীরা।

হঠাৎ করে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তামাবিল স্থলবন্দরের ওপারে হাজার হাজার পণ্যবাহী ট্রাক আটকা পড়েছে। গত শুক্রবার থেকে ওই ট্রাকগুলো সীমান্তের ওপারের ডাউকী এলাকায় আটকে আছে। স্থানীয় চুনাপাথর আমদানিকারকদের গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়ায় এসব ট্রাক প্রবেশ করতে পারছে না।

এতে করে প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। ব্যবসায়ীদের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন তামাবিল বন্দর দিয়ে ৮০০-৯০০টি পাথর বোঝাই ট্রাক প্রবেশ করে। দুই দেশের কাস্টমের প্রক্রিয়া শেষ করার পর ভারত থেকে এসে এসব পাথর খালাস করা হতো তামাবিল স্থলবন্দরের নিজস্ব জায়গায়। এরপর ওখান থেকে ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে নিয়ে ভেঙে ওই পাথর বিক্রি করেন।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, তামাবিল স্থলবন্দর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ব্যবসায়ীদের জন্য ভেতরে জায়গা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ ব্যবসায়ীরা বন্দর ব্যবহার না করে এসব পাথর পাশেই থাকা নিজেদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যান। এ নিয়ে রশি টানাটানি রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, দেশের কোনো স্থলবন্দরে এখন পর্যন্ত এই মেশিন চালু হয়নি। কেবলমাত্র তামাবিল স্থলবন্দরেই চালু করা হয়েছে। তারা বলছেন, এখন প্রতিদিন ৮০০-৯০০টি পণ্যবাহী ট্রাক এসে পণ্য খালাস করে চলে যেতে পারে। কিন্তু অটোমেশিন ব্যবহার শুরু হলে প্রতিদিন ১০০-১৫০টি ট্রাক ঢুকতে পারবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ব্যবসায়ীরাই। আর এতে ব্যবসায়ীদের স্বাধীনতা হরণ করা হচ্ছে। এ কারণে এক সপ্তাহ আগে চিঠি পাওয়ার পর তারা পণ্য আমদানি করছেন না। প্রায় দুই মাস আগে বিষয়টি জানার পর তারা প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

আমদানিকারকরা জানান, তামাবিল স্থলবন্দরে এতোদিন ‘ওয়েটব্রিজ’ দিয়ে পণ্য পরিমাপ করা হতো। হঠাৎ করে ‘অটোমেশন সিস্টেম’ চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু সীমান্তের ওপারে ভারতের ডাউকি স্থলবন্দরে এখনো ‘অটোমেশন’ চালু হয়নি। ডাউকি স্থলবন্দরে ফিতা দিয়ে ট্রাক পরিমাপ করে পণ্যের ওজন নির্ধারণ করে চালান দেয়া হয়। কিন্তু এপারে ‘অটোমেশন সিস্টেমে’ পরিমাপের পর পণ্যের ওজন বেশি দেখায়। এতে ব্যবসায়ীদের একদিকে বাড়তি রাজস্ব দিতে হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যাংকিং জটিলতায়ও পড়তে হচ্ছে। কিন্তু উভয় দেশের স্থলবন্দরে ‘অটোমেশন’ চালু থাকলে তাদেরকে এই সমস্যায় পড়তে হতো না। তারা জানান, তারা ডিজিটালাইজেশনের পক্ষে। তবে সীমান্তের একপারে ম্যানুয়েল ও অন্যপারে অটোমেশন হলে নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়।

সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম ভূঞা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অটো এসএমএস সফটওয়্যার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এ পদ্ধতি বন্ধের দাবিতে আমদানি বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে সফটওয়্যার পদ্ধতি বন্ধ করা হবে কি না, এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, স্থলবন্দর ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে অটোমেশন চালু হয়েছে। এতে সেবার মান আরও বেড়েছে।

তামাবিল চুনাপাথর, পাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সহ-সভাপতি জালাল উদ্দিন বলেন, কোন আমদানিকারক ১ হাজার টন পাথর আমদানির জন্য এলসি করলেন। ডাউকি স্থলবন্দরে ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পরিমাপ করে ১ হাজার টন পাথর ছাড় দেয়া হলো। কিন্তু তামাবিলে অটোমেশনে সেখানে ১১শ’ টন দেখালো। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক আপত্তি জানিয়ে বসে। বাড়তি ১শ’ টনের টাকা ভারতীয় রফতানিকারকদের কিভাবে পরিশোধ করা হয়েছে তা জানতে চায়। তখন মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হয় আমদানিকারকদের দিকে।

তিনি আরো জানান,প্রতিদিন তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে একহাজারের বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে আসে। এতে সরকারের রাজস্ব আদায় হতো ৫০ লাখ টাকার মতো। কিন্তু আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন