English

24 C
Dhaka
মঙ্গলবার, নভেম্বর ১৯, ২০২৪
- Advertisement -

অসুস্থ হয়ে পড়েছেন শাবিপ্রবির অনশনরত শিক্ষার্থীরা, হাসপাতালে ভর্তি

- Advertisements -

জহিরুল ইসলাম মিশু: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল বেলা ৩টা থেকে ২৪ শিক্ষার্থী অনশন শুরু করেন। এরপর কনকনে শীতের রাত পেরিয়ে এসেছে নতুন দিন।

কিন্তু অনশনকারীরা অনড়। না খেয়ে থাকা আর শীতের কারণে অনশনরত শিক্ষার্থীরা এখন অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।এ পর্যন্ত পাঁচ জনকে নগরীর বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার শাবি ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আগের মতোই অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, শীত থেকে বাঁচতে সড়কের মধ্যেই লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন অনশনকারীরা। কুয়াশার হাত থেকে রক্ষা পেতে মাথার ওপরে টানিয়েছেন সামিয়ানা। তবু শীতে কাঁপছেন তারা। এর মধ্যেই শুয়ে শুয়ে বই পড়ছেন কেউ কেউ। অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাথে অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও উপস্থিত রয়েছেন।

এ সময় অনশনকারী জাহিদুল হাসান জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব। কোনো প্রতিবন্ধকতাই আমাদের টলাতে পারবে না। শুধু ওয়াশরুমের প্রয়োজন ছাড়া আমরা এই জায়গা থেকে উঠব না। কোনো ধরনের খাবারও গ্রহণ করব না।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, যারা অনশনে রয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যে ছয়জন শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দিতে শাবিতে রয়েছে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. বাবলু হোসেন। তিনি জানান, বেশি জ্বর ও প্রেসার কমে যাওয়ায় তাদের অবস্থা খারাপের দিকে যাচ্ছিল। তাই দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এদিকে শাবির চিকিৎসা কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. মাসরাবা সুলতানার নেতৃত্বে একদল স্বাস্থ্যকর্মী আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হয়েছেন। তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের চিকিৎসা নিতে অস্বীকার করেছেন।

ডা. মাসরাবা জানান, তারা শিক্ষার্থীদের আন্দোলনস্থলের পাশেই পুরো সময় থাকবেন। তারা চাইলে তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করতে চান।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, অনশনকারীরা ইতোমধ্যেই দুর্বল হতে শুরু করেছে। চার-পাঁচ অসুস্থ হয়েই গেছে। আমরা ভার্সিটির মেডিকেল সেন্টার থেকে কোনো সহায়তা পাইনি, অ্যাম্বুলেন্স পাইনি। আমরা রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যোগাযোগ করলে তারা সরাসরি মানা করে দেন যে, তারা এটার সাথে যুক্ত হবেন না। আমরা মাউন্ট অ্যাডোরায়ও যোগাযোগ করি। কিন্তু তারা বলে তাদের নাকি রিসোর্স নাই। আমরা ওসমানী হাসপাতালেও ফোন করি,কিন্তু তারা ফোন রিসিভ করেননি।

তিনি জানান, আমাদের একটাই দাবি, আমরা ভিসির পদত্যাগ চাই। আমরা এই আন্দোলন থামাবো না। যে ভিসির কিচ্ছু যায় আসে না যে, তাঁর শিক্ষার্থীরা মারা গেল নাকি কি হলো। উনার কাছে গদিটাই বড় বিষয়। আরেক শিক্ষার্থী বলেন, অনশনকারীদের কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু তবুও উপাচার্য গদি ছাড়ছেন না। এই ২৪ জনের কিছু হলে আরো ২৪ জন আসবে। এরপর আরো ২৪ জন আসবে। দেখি তিনি পদত্যাগ না করে কিভাবে থাকেন।

প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্রকল্যাণ উপদেষ্টার পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি থাকলেও আন্দোলনরতরা এখন উপাচার্যের পদত্যাগেই সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের জন্য গতকাল বুধবার বেলা ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। অন্যথায় আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন। গতকাল সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তার পদত্যাগের অপেক্ষায় ছিলেন। তবে উপাচার্য পদত্যাগ না করায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে আমরণ অনশন শুরুর সিদ্ধান্ত নেন।

উল্লেখ্য বুধবার বিকাল ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন শুরু করেন ১৫ ছেলে ও ৯ মেয়ে শিক্ষার্থী।
এদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গতকাল বিকাল ৪টায় প্রায় আড়াই শ’ শিক্ষকের সঙ্গে জুম মিটিং করেন উপাচার্য। জুম মিটিং শেষে রাত ৮টার দিকে শতাধিক শিক্ষক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে তাদের আন্দোলন স্থগিত করার অনুরোধ করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের বলেন, আগে আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে আপনারা একাত্মতা প্রকাশ করুন।

Notify of
guest
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন
সবচেয়ে নতুন Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
Advertisements
সর্বশেষ
- Advertisements -
এ বিভাগে আরো দেখুন