জহিরুল ইসলাম মিশু: দীর্ঘদিন থেকে সিলেটে জ্বালানি তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত পরিমানে জ্বালানি তেল না পাওয়ায় ফুসে উঠেছেন সিলেট অঞ্চলের ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। ৬ দফা দাবিতে বুধবার ২শ ট্যাংকলরি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছে ৫টি সংগঠনের মালিক-শ্রমিকরা।
মিছিলটি নগরের দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশিদ চত্বর থেকে শুরু হয়। সিলেটে প্রতিদিন প্রায় দেড় লাখ লিটার জ্বালানি তেলের চাহিদা থাকলেও, মাত্র ৬০ হাজার লিটার সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে দীর্ঘদিন ধরে সমস্যার সমাধানসহ সিলেটের বন্ধ থাকা গ্যাস ফিল্ডগুলো চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন পাম্পের মালিকেরা। এ নিয়ে দীর্ঘদিন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সমাধান হয়নি। এ জন্য তারা আন্দোলনের দিকে এগোলেন।
৬ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সিলেট বিভাগ জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃক কোন সিএনজি ফিলিং স্টেশনের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে পারবেন না। যদি বিচ্ছিন্ন করা হয় তবে সিলেট বিভাগের সকল সিএনজি স্টেশন বন্ধ করে দেওয়া হবে। সভায় আরো সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়, অবিলম্বে গ্যাসের লোড যেন বৃদ্ধি করা হয়। পেট্রোল, অকটেন, ডিজেলের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। সিলেট গ্যাস ফিল্ড থেকে ট্যাংকলরির ডেসপাস চালু করতে হবে।
সিলেটের ফিল্ডগুলোতে উত্তোলন বন্ধ ও চট্টগ্রাম থেকে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে পরিবহন সমস্যায় এ সংকট দেখা দিয়েছে। কোনোভাবেই জ্বালানি তেলের এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারছেন না সিলেটের ব্যবসায়ীরা।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে বার বার ধর্ণা এবং কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েও হচ্ছে না সমাধান। সর্বশেষ গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমানের সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় এক মতবিনিময় সভা। ওই সভায় এক সপ্তাহের জন্য সময়সীমা বেঁধে দেন সিলেটের জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা।
এ সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবেন বলে ওইদিন হুশিয়ারি দিয়েছিলেন তারা। এসময় দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কোনো সমাধান হয়নি। সেকারনে বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামছেন জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ সিএনজি ফিলিং স্টেশন এন্ড কনভার্সন ওয়ার্কশপ ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলারস ডিস্ট্রিবিউটরস এজেন্টস্ এন্ড পেট্রোলপাম্প ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি, বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি, বাংলাদেশ এলপিজি ফিলিং স্টেশন ওনার্স এসোসিয়েশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি এবং সিলেট বিভাগীয় ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘সিলেট বিভাগীয় পেট্রোল পাম্প সিএনজি এলপিজি, ট্যাংক-লরি মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ’পক্ষ থেকে আজ ২শ ট্যাংকলরি নিয়ে ৬দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে উক্ত সংগঠনগুলো।