আক্ষেপের পাল্লা কেবল ভারী হচ্ছে ফ্রান্সের। বারবার শিরোপার খুব কাছে গিয়েও খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। অলিম্পিকেও একই গল্প, সোনার ঝলকানি চোখে পড়লেও গলায় পড়া হলো না। ফ্রান্সকে হারিয়ে প্যারিস অলিম্পিক ফুটবলের সোনা জিতেছে স্পেন।
গত ৩২ বছরে বিশ্বকাপ আর ইউরো জয়ের স্বাদ পেলেও স্পেন জেতেনি অলিম্পিকের স্বর্ণ। অবশেষে ফুরাল অপেক্ষা। ১৯৯২-এর পর দ্বিতীয়বার সোনা জিতল স্প্যানিশরা। শুক্রবার শিরোপার লড়াইয়ে পার্ক দ্য প্রিন্সেসে শুক্রবার ফ্রান্সকে ৫-৩ গোলে হারিয়েছে স্পেন।
স্পেন ফুটবলের সময়টা যে বেশ ভালোই যাচ্ছে, তা তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আজ তো সোনা জিতল, আর কয়েক দিন আগেই তো ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাও দখলে নিয়েছিল তারা।
ফাইনাল বেশ জমে উঠেছিল। নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে উত্তাপ ছড়ায় ৩-৩ ছিল সমতা। ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানে জোড়া গোল করে ফরাসিদের হতাশায় ডোবান সের্হিও কামেও। ছেলেদের অলিম্পিক ফুটবল ইতিহাসে এখন এটাই সবচেয়ে বেশি গোলের (৮) ফাইনাল।
অথচ শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে স্পেন। ম্যাচের ১১ মিনিটে এক ভুলের মাশুলও গুণতে হয় তাদের। ফ্রান্সকে প্রথম লিড এনে দিলেন এনজো মিলট। তবে ম্যাচে ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি স্প্যানিশরা। ১০ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে চালকের আসনে বসে যায় তারা।
১৮তম মিনিটে সমতায় ফেরে স্পেন। ফারমিন লোপেজের গোলে স্কোরলাইন তখন ১-১। সেখান থেকে ২৫ মিনিটেই স্কোরলাইন ২-১ করেন লোপেজ। তবে ক্ষুধা কমেনি। তার ঠিক ৩ মিনিট পরেই আরও একটি গোল করে স্পেন। এবার স্কোরশিটে নাম লেখান অ্যালেক্স বায়েনা।
ফ্রি-কিক থেকে দারুণ এক গোল করেন এই মিডফিল্ডার। ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে স্পেন। অনেকটা জয়ের সুবাতাস নিয়েই যেন বিরতিতে যায় ইউরো চ্যাম্পিয়নরা।
বিরতির পর ওই ব্যবধান ধরে রেখে জয়ের পথেই ছিল স্পেন। কিন্তু ৭৯তম মিনিটে মাঘনেস আকলিওচে ব্যবধান কমানোর পর ৫ মিনিট যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে পেনাল্টি থেকে স্কোরলাইন ৩-৩ করেন জ্যাঁ-ফিলিপে মাতেতা।
৩-৩ গোলের সমতায় শেষ হয় নির্ধারিত ৯০ মিনিট। খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেই অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচের চিত্রপট পাল্টে দেন বদলি হিসেবে নামা সের্হিও কামেয়ো। জোড়া গোল করে দলকে এনে দেন সোনা জয়ের স্বাদ।
১০০ মিনিটে আদ্রিয়ান বের্নারের থ্রু বল ধরে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড। ১২০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে দ্বিতীয় বারের মতো স্কোরশিটে নাম লেখান তিনি। শেষ পর্যন্ত ৫-৩ গোলের জয় পায় স্পেন।
স্পেনের দ্বিতীয়বারের মতো সোনা জয়ের আক্ষেপ ফুরালেও ফ্রান্সের দ্বিতীয় সোনা জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরো অন্তত চার বছর। তাদের একমাত্র সোনা এসেছিল ১৯৮৪ সালে।