শনিবার রাতে ডিনার পার্টিতে সিঙ্গাপুরের দানেলে তানের সঙ্গে অনেকক্ষণ আলাপ করেছিলেন সাবিনা খাতুন। নিজে ফরোয়ার্ড হওয়ায় প্রতিপক্ষের আক্রমণভাগের সেরা তারকার ফুটবলের গল্পগুলো শুনতে আগ্রহটা বেশিই ছিল বাংলাদেশ নারী দলের অধিনায়কের। সেই আলাপচারিতায় সাবিনা জানতে পারেন, সিঙ্গাপুরের ফরোয়ার্ড দানেলে খেলেন জার্মান নারী ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। দেরিতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়ায় শুক্রবার বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম প্রীতি ফুটবল ম্যাচে খেলতে পারেননি ১৯ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড।
২০১৯ সাল থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে খেলে ২০ ম্যাচে চার গোল করা দানেলে দলের অন্যদের চেয়ে সেরা। যেহেতু বাংলাদেশের কাছে প্রথম ম্যাচে তিন গোলে হেরেছিল, সেহেতু আজ দ্বিতীয় ম্যাচে দানেলেকে নিয়েই একাদশ সাজানোর সম্ভাবনা বেশি সিঙ্গাপুর কোচ করিমের। উড়তে থাকা মেয়েরাও জানেন, প্রতিপক্ষ শেষটায় ঘুরে দাঁড়ানোর সব চেষ্টায়ই করবে। তাই সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সাবিনা খাতুনরা ভাবছেন প্রতিপক্ষের দানেলেকে নিয়েও। গতকাল অনুশীলন করতে যাওয়ার সময় রক্ষণভাগের অন্যতম তারকা মাসুরা পারভীনকে তো বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের এই ফরোয়ার্ডকে থামানোর কৌশল রপ্ত করতে বলেছেন সাবিনা।
কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আজ বিকেল ৩টায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় প্রীতি ফুটবল ম্যাচটি বাংলাদেশ নারী দলের বছরের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। র্যাঙ্কিংয়ে ১২ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুরকে (১৩০) হারিয়েই ২০২৩ সালের শেষ ম্যাচটি রাঙাতে চান বাংলাদেশের (১৪২) মেয়েরা। অচেনা সিঙ্গাপুরকে প্রথম ম্যাচে যেভাবে উড়িয়ে দিয়েছিলেন লাল-সবুজের মেয়েরা, তাতে সোমবারের ম্যাচে ফেভারিট স্বাগতিকরাই।
কিন্তু শেষ ম্যাচের আগে সাইফুল বারী টিটুর দল সতর্ক। গত বছরের জুনে শক্তিশালী মালয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথমটিতে ছয় গোলে জিতে পরের ম্যাচে না হারলেও কোনো গোল করতে পারেননি মেয়েরা। অতীত অভিজ্ঞতা থেকেই আজকের ম্যাচটি কঠিন হবে বলে মনে করছেন সাবিনা। গতকাল অনুশীলন শেষে দল নিয়ে কণ্ঠে যেমন আত্মবিশ্বাস ফুটে উঠেছে, তেমনি করে প্রতিপক্ষকে নিয়েও সতর্ক মন্তব্য সাবিনার, ‘আমার কাছে একটা জিনিস মনে হয়, যখন আপনি একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পরপর দুটি ম্যাচ খেলতে যাবেন, তখন প্রথমটির চেয়ে দ্বিতীয়টি কঠিন হয়। মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রেই তো তাই হয়েছে। প্রথম ম্যাচটি জয়ের পর, দ্বিতীয়টি হয়েছিল ড্র। প্রতিপক্ষ আসলে এই জায়গাগুলোতে তাদের পর্যবেক্ষণগুলো ভালোভাবে করে থাকে। তারা চাইবে আমাদের রুখে দিতে; তবে একইভাবে আমাদের পরিকল্পনা হলো প্রথম ম্যাচে যে মিসগুলো হয়েছিল, সেগুলোকে ওভারকাম করে ভালো করা।’
প্রথম ম্যাচে তিন গোলের দুটিই করেছিলেন তহুরা খাতুন। তাঁকে নিয়ে সিঙ্গাপুর কোচ যে বিশেষ পরিকল্পনা নেবেন, তা সহজেই অনুমেয়। অন্যদিকে সাবিনারাও সেদিনের ভুলগুলো ওভারকাম করে দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চান, ‘জয় তো অবশ্যই দরকার। যেহেতু এশিয়ান গেমসে খুব ভালো কিছু আসেনি। আমরা চাই বছরটা খুব ভালোভাবে শেষ করতে। সবকিছু মিলিয়ে দল নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী। আমরা যদি স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারি, অবশ্যই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারব।’