জাপানের টোকিওতে চলছে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। সারা বিশ্বের বিভিন্ন ক্রীড়ার মেধাবী প্রতিযোগীরা এখন লড়ছেন শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে। এর মধ্যে আছেন ১২ বছর বয়সী সিরিয়ার কিশোরী মেয়ে হেন্ড জাজা। টোকিও অলিম্পিকের সবচেয়ে কমবয়সী প্রতিযোগী হিসেবে জাজা ইতিমধ্যে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছে।
জাজার অলিম্পিক যাত্রা এত সহজ ছিল না। পশ্চিম এশিয়ার বাছাইয়ে টিকে নাম লেখায় টোকিও অলিম্পিকে। সে হারিয়েছে তার থেকে চারগুণ বেশি বয়সী লেবাননের প্রতিযোগী মারিয়ানা সাহাকিয়ানকে। এ ছাড়া নিজ দেশে সবধরনের প্রতিযোগিতায় সর্বোচ্চ সাফল্য নিয়ে টেবিল টেনিসে সিরিয়ার দ্বিতীয় অলিম্পিয়ান হিসেবে জাজা টোকিও অলিম্পিকে নাম লেখায়।
১২ বছর বয়সী জাজার জন্ম হামায়। যেটি গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত শহর হোমস থেকে ৩০ মাইল উত্তরে। সবধরনের বাধাকে উপেক্ষা করে জাজা নিজেকে নিয়ে এসেছেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় আসরে। এবারের অলিম্পিকে অবশ্য তার যাত্রাটা শুভ হয়নি। প্রথম রাউন্ডে বাদ পড়তে হয়েছে তার থেকে তিনগুণ বেশি বয়সী অস্ট্রিয়ান প্রতিযোগী লিয়ু জিয়ার কাছে হেরে।
নারী এককের প্রাথমিক রাউন্ডে ৪-০ ব্যবধানে হারে জাজা। এক প্রতিবেদনে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, কখনো হতাশ দেখা যায়নি জাজাকে; চাপ সামলে পুরোটা সময়জুড়ে ছিল প্রাণবন্ত।
ম্যাচ শেষে জাজার মন্তব্য, ‘মানসিকভাবে অলিম্পিকে লড়ার জন্য প্রস্তুত থাকা খুবই কঠিন। কিন্তু আমি মনে করে আমি কোনোভাবে এটা উতরে গেছি। এটাই আমি ম্যাচের সময় কাজে লাগিয়েছি।’
বয়সে ছোট এখনো যাওয়ার বাকি অনেক পথ। তবে জাজার কথায় দেখা যাচ্ছে বুদ্ধিমত্তা আর পরিপক্বতার চাপ। ‘এই হারটাই আমার প্রধান শিক্ষা। আশা করি পরবর্তীতে হবে, আমি কাজ করে যাবো প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় রাউন্ড কাটিয়ে ওঠার জন্য। কারণ আমি এই প্রতিযোগিতায় অনেক বেশি খেলতে চাই।’
এদিকে জাজার প্রতিপক্ষ লিয়ু ঘুমোতে পারেননি তার চেয়ে তিনগুণ কম বয়সী মেয়ের সঙ্গে লড়ার কথা ভেবে। লিয়ুর ১০ বছর বয়সী একটা মেয়েও আছে। ম্যাচের আগে লিয়ু তার মেয়েকে জিজ্ঞেস করেছিলেন; ‘তুমি জানো আমি কাল তোমার থেকে দুই বছরের বড় একজনের সঙ্গে খেলবো? তখন মেয়ে উত্তর দিয়েছে; তাহলে তুমিই জিতবে!’
আসলেইতো! লিয়ুর মেয়ের কথাই সত্যি হয়েছে। রেকর্ড গড়ে অলিম্পিকে নাম লিখিয়েও টিকে থাকা হলো না হেন্ড জাজার।