স্কুলে থাকতেই অনেকে জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণ করে ফেলেন। লরেন প্রাইসও ব্যতিক্রম ছিলেন না। তবে তার লক্ষ্যের কথা শুনে চোখ বড় হয়ে উঠেছিল স্কুল শিক্ষকের। কেননা প্রাইসের লক্ষ্য ছিল তিনটি—কিকবক্সিংয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, ওয়েলসের হয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবল ও অলিম্পিকে খেলা। ২৭ বছর বয়সে জীবনের তিনটি লক্ষ্যই পূরণ করে ফেলেছেন প্রাইস। টোকিও অলিম্পিকে গতকাল নারী মিডলওয়েইট বক্সিংয়ে চীনের লি কিয়ানকে ৫-০ ব্যবধানে হারিয়ে স্বর্ণ জিতেন এই ব্রিটিশ বক্সার।
জন্ম নেওয়ার তিন দিনের মাথায় প্রাইসকে ফেলে চলে যান তার বাবা-মা। তারপর বড় হয়ে উঠেন দাদা-দাদির কাছেই। গত নভেম্বরে প্রাণপ্রিয় দাদাকে হারান প্রাইস। স্বর্ণ জয়ের পর এই বক্সার বলেন, ‘তিনি (দাদা) আমার জীবনের বড় অংশ ছিল। আমি জানি, আজ তিনি ওপর থেকে সবকিছু দেখছেন। তিনি ও দাদি না থাকলে আমি কিছুই অর্জন করতে পারতাম না। তারা সবসময়ই আমাকে শতভাগ সমর্থন দিয়েছে।’
বক্সিংয়ের আগে সমানতালে কিক বক্সিং ও ফুটবল খেলে যান প্রাইস। কিকবক্সিংয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছেন বটেই, ফুটবলে ওয়েলসের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ৫২টি ম্যাচে। ২০০৪ সালে এথেন্স অলিম্পিকে দুটি স্বর্ণ পাওয়া ব্রিটিশ অ্যাথলেট কেলি হমসকে দেখে অলিম্পিকে খেলার বাসনা জাগে প্রাইসের। এর জন্য তায়াকোয়ান্দোতে নাম লেখালেও শেষ পর্যন্ত বক্সিংয়েই নিজেকে খুঁজে পান তিনি।
অলিম্পিকের শুরু থেকেই গতি আর কৌশলে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করে আসছেন প্রাইস। ফাইনালে তো এতোটাই দ্রুত ছিলেন যে চীনের বক্সার লি কিয়ান পাত্তাই পাননি তার কাছে। তাই স্বপ্ন পূরণের পথটা খুবই মসৃণ ছিল প্রাইসের, ‘স্বপ্ন সত্যি হওয়ায় আমি খুবই আনন্দিত। আট বছর বয়স থেকেই এটা আমার স্বপ্ন ছিল এবং কেলি হোমস দেখার পর সেটা আরো বেড়ে যায়। আমি জানতাম না কিসে খেলব, তবে অলিম্পিকে যাওয়াটাই ছিল স্বপ্ন। আমি শব্দে প্রকাশ এর মানে আমার কাছে কী (স্বর্ণ জয়)।’