কৃষ্ণা রানী সরকার। নারী ফুটবল দলের কান্ডারি। জাতীয় দলে আক্রমণভাগের শক্তি। কিন্তু পায়ের আঙ্গুলে সমস্যা হওয়ায় কত দিন ধরে ফুটবলে লাথি দিতে পারছেন না। মাঠে নামতে পারছেন না। চাপা কষ্ট নিয়ে নিজেকে তৈরি করছেন কৃষ্ণা। ডান পায়ের শেষ তিনটি আঙ্গুল শুকিয়ে যাচ্ছিল। পায়ের পাতায় চাপ পড়ছিল। কয়েক মাস ধরে ফুটবল থেকে দূরে রয়েছেন তিনি।
ডাক্তারের পরামর্শে কৃষ্ণা রিহ্যাব করছেন। মাঝে ভারতের ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব মহিলা দল গঠনে কৃষ্ণার কথা জানতে চেয়েছিল। তাকে নিতে চেয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব। কিন্তু চোট শুনে তারা পিছিয়ে যায়। ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের ভাবনার কথা কৃষ্ণার কান পর্যন্ত পৌঁছায়নি। কৃষ্ণাও ওসব নিয়ে ভাবছেন না। কীভাবে নিজেকে তৈরি করে আবার খেলায় ফিরবেন সেদিকে চেয়ে আছেন টাঙ্গাইলের এই মেয়ে।
এক মাস আগে ডিসেম্বর কমলাপুর স্টেডিয়ামে সিংগাপুর নারী ফুটবল দল দুই ম্যাচ খেলে গেছে। বাংলাদেশ দুই ম্যাচ জিতেছে। খেলা দেখার সুযোগ হলেও মনটা ভালো ছিল না কৃষ্ণার। সুস্থ থাকলে কৃষ্ণা একাদশে থাকতেন। সিংগাপুরকে হারিয়ে সিনিয়র দলের সব ফুটবলার ১৫ দিনের ছুটিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কৃষ্ণা বাফুফের ক্যাম্পেই ছিলেন। সুস্থ হওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ডাক্তার কিংবা ফিজিও তারা যেভাবে চলতে বলছেন তা মেনে কাজ করছেন। কৃষ্ণা কাল জানালেন এখন নাকি আগের চেয়ে ভালো আছেন। ডাক্তার তিন মাস খেলার বাইরে থাকতে বলেছেন। আর কৃষ্ণা বলেন, ‘উন্নতিটা যেভাবে হচ্ছে তাতে তিন মাস নাও লাগতে পারে। আরো কম সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে যেতে পারি।’
নতুন বছরটা কেমন দেখছেন জানতে চাইলে কৃষ্ণা বলেন, ‘আরো বেশি অনুশীলন করতে চাই। আরো বেশি ম্যাচ খেলতে চাই। আগামীতে আরো বেশি আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন করা হচ্ছে। আমরা প্রত্যেক ম্যাচে ভালো খেলতে চাই। কারণ এ বছর আমাদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ রয়েছে। ট্রফি ধরে রাখার সুযোগ নিতে হবে। দেশের মানুষ দেখতে চায়, আমরা নারী ফুটবলের ঝান্ডা উড়িয়ে চলেছি। আমাদের দেখাদেখি আরো নারী ফুটবলার এগিয়ে আসবেন। দেশ এক সময় নারী ফুটবলে এশিয়ার মঞ্চে দাপট দেখাবে এটাই আমাদের স্বপ্ন নতুন বছরের।’
পুরোনো বছর ২০২৩ সালটা কেমন গেল। ‘খুব ভালো। বছরের শেষটায় আমি মাঠের বাইরে থাকলেও আমাদের দল ভালো করছে।’ নতুন বছর উদ্যাপন কেমন হলো? ‘আমাদের উদ্যাপনটা একই রকম। ক্যাম্পে থাকি। সবাই মিলে এক সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করি। ছবি তুলি। অন্যদের আতশবাজি দেখি। বিকট শব্দে কেঁপে উঠি এবং একই সঙ্গে রোমাঞ্চ অনুভব করেছি। আমরা যখন কোনো খেলায় চ্যাম্পিয়ন মঞ্চে ট্রফি উঁচিয়ে ধরি সেটা আমাদের আসল উদ্যাপন—বললেন কৃষ্ণা।’