হ্যাকারদের জ্বালাতন নতুন কিছু নয়। বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ হাজার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ওপর নজরদারি করেছেন হ্যাকাররা। আরও চমকপ্রদ খবর হচ্ছে এই কাজে যুক্ত ছিল ভারত, ইসরায়েলসহ বিভিন্ন দেশের আড়িপাতার প্রতিষ্ঠান। ১৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) এসব তথ্য প্রকাশ করেছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা।
প্রতিবেদনে মেটার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রায় ১০০টি দেশের অধিকারকর্মী, ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকদের ওপর নজরদারি করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম থেকে প্রায় দেড় হাজার পেজ ও অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
এসব পেজ ব্যবহার করে মূলত তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হতো। সিএনএন ও রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এসব অ্যাকাউন্ট ও পেজ ব্যবহার করতো সাতটি প্রতিষ্ঠান। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম প্রকাশ করেছে মেটা।
সম্প্রতি ইসরায়েলি প্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের মতো ‘ডিজিটাল গোয়েন্দা সংস্থা’গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন ও দেশটির আইন প্রণেতারা। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোও তৎপর হচ্ছে তারা।
এ কারণে সম্প্রতি হ্যাকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নজরদারি বাড়িয়েছে মেটা। নতুন এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে সেই বার্তাই দিল। মার্কিন সরকার এমন পদক্ষেপের অংশ হিসেবে ইসরায়েলের আড়িপাতার সফটওয়্যার নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান এনএসও গ্রুপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ ছাড়া মেটাও এনএসওর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে।
এ প্রসঙ্গে মেটার সিকিউরিটি পলিসি বিভাগের প্রধান নাথানিয়েল গ্লেইচার বলেন, এনএসওর মতো শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়, আড়িপাতার জন্য সফটওয়্যার তৈরি করতে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই ইঙ্গিতই দেওয়া হলো।
যে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের ব্ল্যাক কিউব। এই প্রতিষ্ঠানটিকে ব্যবহার করেছিলেন ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হলিউডের প্রভাবশালী প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিন। ভারতের বেলট্রক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে।
কবওয়েবস টেকনোলজিস, কগনাইট, ব্লুহোয়াক সিআইয়ের অ্যাকাউন্ট মুছে ফেলেছে ফেসবুক। এ সবগুলোই ইসরায়েলের। এ ছাড়া উত্তর মেসিডোনিয়ার সাইট্রক্স ও চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টও মুছে দিয়েছে ফেসবুক।
কীভাবে এসব আড়িপাতার প্রতিষ্ঠানগুলোর সন্ধান মিলল, এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা ফেসবুক বা মেটার পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। তবে তারা নিয়মিতভাবেই ভুয়া ও ক্ষতিকর অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে থাকে।