ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বাংলাদেশ কেবল তৈরি পোষাক রপ্তানিকারক দেশই নয়, বাংলাদেশ মেধা রপ্তানির দেশ হয়েছে। অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করে প্রযুক্তিতে শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্বের জায়গায় উপনীত হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের অভিযাত্রা আজ বিশ্বের বিস্ময়। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রপ্তানি করছে। রপ্তানিকরা সফটওয়্যারের শতকরা ৩৪ ভাগ আমেরিকার বাজারে যাচ্ছে। আমরা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ল্যাপটপ এমনকী আইওটি ডিভাইসও রপ্তানি করছি।
মন্ত্রী গতকাল রাতে ঢাকায় এক হোটেলে চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে আয়োজিত সীডস ফর দ্য ফিউচার ২০২২ প্রতিযোগিতার গালা ইভেন্টে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের জীবনধারার সাথে ডিজিটাল প্রযুক্তি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে। সাম্প্রতিক বন্যায় দুর্বিষহ দুর্ভোগের মাঝেও বন্যার্ত মানুষ খাদ্যের সাথে ডিজিটাল সংযুক্তিও প্রত্যাশা করেছে। এ বিষয়ে বেশ কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা খাবার নয় তারা মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল চায়, ইন্টারনেট চায় আগে। তারা মনে করে নেটওয়ার্ক সচল থাকলে তারা প্রশাসনসহ আপনজনদের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারবে, তাদের দুর্ভোগ লাগব হবে। এটাই হচ্ছে আজকের বাংলাদেশের বাস্তবতা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন. পৃথিবীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দেশ বাংলাদেশকে প্রথম ডিজিটাল দেশ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে ইংল্যান্ড, ২০১৪ সালে ভারত এবং ২০১৯সালে পাকিস্তান তাদের দেশকে ডিজিটাল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, হাজার বছরের পরাধীন জাতিকে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছেন। কিসিঞ্জারের তলাবিহীন ঝুড়ির অবজ্ঞাখ্যাত বাংলাদেশ আজ সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটের বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশ আজ নিজের টাকায় পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম সেতু পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে। এই সেতু নির্মাণে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হুয়াওয়ে প্রতিভা অন্বেষণে যে ভূমিকা রাখছে তা দেশের তরুণ সমাজকে অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রযুক্তিতে শিক্ষা অর্জন করতে না পারলে সামনের দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা কঠিন হবে। তিনি বলেন নতুন প্রজন্মকে প্রযুক্তি শিখাতে না পারলে শিক্ষিত বেকার তৈরি হবে। ডিজিটাল যুগের যোগ্য মানুষ গড়ার জন্য শিক্ষার্থাীদেরকে প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর মন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন শিক্ষার্থী এবং ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে বিদ্যমান গ্যাপ কমাতে হবে। মন্ত্রী প্রতিযোগিতার বিচারকদের রায়ের ভিত্তিতে প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকারি ওয়াসিফার নাম ঘোষণা করেন এবং মোট নয়জন বিজয়ীকে উপস্থিত থেকে পুরস্কৃত করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডাইরেক্টর বেট্রিস কালড্রাম, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ভিসি ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের কালচারেল কাউন্সিলর ইউই লিউয়েন এবং হুয়াওয়ে টেকনোলজি লিমিটেডের বোর্ড মেম্বার লি জুনসেং বক্তৃতা করেন।