ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন করাই হচ্ছে ডিজিটাল প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার প্রধানতম হাতিয়ার। ঔপনিবেশিক শাসনামলের প্রবর্তিত প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার পরিবর্তে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। প্রাথমিক স্তর থেকেই আমরা শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু করেছি। মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশের সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিশন বাস্তবায়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাসহ সংশ্নিষ্ট সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ বুধবার কক্সবাজারে উদ্যোক্তা ফোরাম আয়োজিত জাতীয় উদ্যোক্তা সম্মেলনে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য ডিজিটাল দক্ষতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। ডিজিটাল দক্ষতা অর্জন মানে প্রোগ্রামার বা বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হবে না। ডিজিটাল ডিভাইস পরিচালনাসহ রোবটিক্স, এআই, ব্লকচেইন, আইওটি ও বিগডাটাসহ আগামীদিনের ডিজিটাল প্রযুক্তি পরিচালনার জ্ঞান অর্জন করাই জীবনকে বদলে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় । এর মাধ্যমে নিজেই নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা সম্ভব। ইতোমধ্যেই আমাদের দেশে সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অনেক উদ্যোক্তা গড়ে উঠেছে্। তাদের মধ্যে নারীরা মোবাইল ব্যবহারে যেমন পুরুষের চেয়ে বেশি এগিয়ে আছে তেমনি তারা বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে দক্ষতার সাক্ষর রাখছেন। এমনকি তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করে আউট সোর্সিং কাজের মাধ্যমে ঘরে বসে ডলার উপার্জন করছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের ধারাবাহিকতা তুলে ধরে বলেন, কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতির এই ভূখন্ডের মানুষ অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করে প্রযুক্তিতে শতশত বছর পিছিয়ে ছিলো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধের ধ্বংসস্তুপের উপর দাঁড়িয়েও বাংলাদেশকে তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের অভিযাত্রা শুরু করেছিলেন। আইটিইউ, ইউপিইউ এর সদস্যপদ অর্জন, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, টিএন্ডটি বোর্ড গঠন, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয় করণ, কুদরতে খুদা শিক্ষা কমিশন গঠনসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন শুরু করে তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সালে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশে দুরদৃষ্টি সম্পন্ন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজটি চারা গাছে রূপান্তর করেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির পথ বেয়ে তিনি ২০০৯ থেকে গত ১৪ বছরে তা বিরাট মহিরূহে রূপান্তর করেছেন বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ইন্টারনেট এখন জাতীয় জীবনে শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো প্রয়োজনীয় একটি উপকরণ। আমরা দেশের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিয়েছি। দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকা ফোরজি নেটওয়ার্ক পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ফাইভ-জি প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছে। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তা চালুর প্রক্রিয়া চলছে। তিনি ডিজিটাল প্রযুক্তির এই মহাসড়ক উদ্যোক্তাদের জন্য একটি সুযোগ বলে উল্লেখ করেন। মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তির সুযোগ কাজে লাগাতে দক্ষ উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে উদ্যোক্তা সম্মেলন ফলপ্রসূ অবদান রাখবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।