চলতি বছরই ফেলে দেওয়া হবে বা ই-বর্জ্যে পরিণত হবে অন্তত ৫৩০ কোটি মোবাইল ফোন। সম্প্রতি ইউরোপের ওয়েস্ট ইলেক্ট্রিক্রাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইক্যুইপমেন্ট (ডব্লিউইইই) ফোরাম এ তথ্য জানিয়েছে। বৈশ্বিক বাণিজ্যের ভিত্তিতে দেওয়া এ পরিসংখ্যানে পরিবেশের ওপর ই-বর্জ্যের ক্রমবর্ধমান ক্ষতিকর প্রভাবের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। খবর বিবিসির।
গবেষণা বলছে, অনেকেই পুরোনো ফোন ফেলে দেওয়ার পরিবর্তে নিজেদের কাছে রেখে দেন। এতে সেগুলো পুনর্ব্যবহারের সুযোগ নষ্ট হয়। বর্জ্য ইলেকট্রনিক পণ্য থেকে যেসব মূল্যবান ধাতু সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না, সেগুলো খনি থেকে তুলতে হয়। যেমন- তারের মধ্যে থাকা তামা বা রিচার্জেবল ব্যাটারিতে থাকা কোবাল্ট।
ডব্লিউইইই’র মহাপরিচালক প্যাসকেল লেরয় বলেন, মানুষজন বুঝতে পারে না যে, এসব আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ আইটেমের অনেক মূল্য রয়েছে এবং বৈশ্বিকভাবে একসঙ্গে বিপুল পরিমাণের প্রতিনিধিত্ব করে।
বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ১ হাজার ৬০০ কোটি মোবাইল ফোন রয়েছে এবং ইউরোপের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ফোনই আর ব্যবহার করা হচ্ছে না।
ডব্লিউইইই বলেছে, তাদের গবেষণায় ইলেক্ট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক বর্জ্যের ‘পাহাড়’ দেখা গেছে। এর মধ্যে ওয়াশিং মেশিন থেকে শুরু করে টোস্টার বা ট্যাবলেট কম্পিউটার এবং জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) ডিভাইসও রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এ ধরনের বর্জ্যের পরিমাণ বছরে ৭ কোটি ৪০ লাখ টন বৃদ্ধি পাবে।
ডব্লিউইইই’র ম্যাগডালেনা চ্যারিটানোভিজ বলেন, এসব ডিভাইস অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থানের উৎস, যা নতুন ইলেকট্রনিক ডিভাইস বা অন্যান্য সরঞ্জাম, যেমন- উইন্ড টারবাইন, বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারি বা সৌর প্যানেল তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বর্তমানে বৈশ্বিক ই-বর্জ্যের মাত্র ১৭ শতাংশ সঠিকভাবে পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন আগামী বছরের মধ্যে এর পরিমাণ ৩০ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
ম্যাটেরিয়াল ফোকাস নামে একটি সংস্থার জরিপ বলছে, যুক্তরাজ্যের বাড়িগুলোতে এই মুহূর্তে দুই কোটির বেশি অব্যবহৃত কিন্তু কর্মক্ষম বৈদ্যুতিক যন্ত্র ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫৬৩ কোটি পাউন্ড। সংস্থাটির ধারণা, যুক্তরাজ্যের প্রতিটি বাড়ি থেকে চাইলেই অব্যবহৃত বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বিক্রি করে গড়ে ২০০ পাউন্ড পাওয়া সম্ভব।