ডিজিটাল বাংলাদেশ শ্লোগান ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সারা দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছে। এই কর্মসূচি শতশত বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাঙালি জাতিকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছে। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফলে মানুষের জীবনধারা আজ বদলে গেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুদৃঢ় ভিত্তির উপর স্মার্ট বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে । এরই ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা আমরা শুরু করেছি।
মন্ত্রী গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান মিলনায়তনে কবি ও প্রাবন্ধিক জসিম চৌধুরীর ৫টি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, কবি ও গবেষক ড. নূহ-উল-আলম লেনিন। ঝুমঝুমির প্রধান নির্বাহী ছড়াকার ও প্রাবন্ধিক পাশা মোস্তফা কামালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মণি সিংহ ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্টের সভাপতি শেখর দত্ত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, কথা সাহিত্যিক ঝর্না রহমান, কবি ও প্রাবন্ধিক জসিম চৌধুরী এবং ঝুমঝুমি প্রকাশনের প্রকাশক শায়লা রহমান তিথি বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাইজেশনে বাংলাদেশ পৃথিবীর দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, ২০০৯ সালে ডিজিটাল বৃটেন, ২০১৪ সালে ডিজিটাল ভারত, ২০১৫ সালে ডিজিটাল মালদ্বীপ ও ২০১৯ সালে ডিজিটাল পাকিস্তান কর্মসূচি গ্রহণ করে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিই্উ এর সদস্যপদ অর্জন, প্রাথমিক শিক্ষা জাতীয়করণ এবং কারিগরি শিক্ষার প্রসারসহ যুগান্তকারী বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়নের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন। তারই সুযোগ্য উত্তরসূরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে কম্পিউটার সাধারণের জন্য সহজলভ্য করতে কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট ট্যাক্স প্রত্যহার, ৪টি মোবাইল ফোন কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান, ভিস্যাটের মাধ্যমে ইন্টারনেট চালুসহ ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর বপন করা বীজ চারাগাছে রূপান্তর করেন। ২০০৯ থেকে গত গত সাড়ে চৌদ্দবছরে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাধ্যমে চারাগাছটি একটি মহিরূহে রূপান্তরিত হয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লবকে সোনার বাংলা গড়ে তোলার যুগান্তকারী কর্মসূচি উল্লেখ করেন। তিনি এই নিয়ে লেখকদের বই লেখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ষাটের দশকে রাজপথে লড়াইয়ের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে লেখালেখির মাধ্যমে কথা বলে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের কাণ্ডারি হিসেবে বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। উন্নয়েনের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে প্রত্যেককে নিজনিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ড. নূহ-উল-আলম লেনিন বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে পাল্টে যাচ্ছে সারা বিশ্বের চিত্র। ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তব ও দৃশ্যমান। ডিজিটাল বাংলাদেশ যখন দৃশ্যমান তখন বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা এবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।
শেখর দত্ত নির্বাচনী ইশতেহার তৈরিতে সেগুন বাগিচায় সিআরআই এর গোপন অফিসে জনাব মোস্তাফা জব্বার ও নূহ-আলম- লেলিনের ভূমিকার সম্পর্কে তার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, যত দিন বাংলাদেশ থাকবে ততদিন ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি চির অম্লান হয়ে থাকবে।
পরে মন্ত্রী ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযানের ত্রিশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের পথ চলার ত্রিশ বছরের বিস্তারিত তথ্যচিত্র তুলে ধরা হয়। গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে রাজনীতিক, শিক্ষাবীদ, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের কর্মকর্তাগণ, বরেণ্য সাংবাদিক, অভিননেতা ও কণ্ঠ শিল্পিসহ সমাজের বিশিষ্টজনদের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠানটি একটি মিলন মেলায় রূপ নেয়।