হ্যারি পটার থেকে শুরু করে স্টার টেক। কিংবা প্রাচীন রূপকথার সেই ডাইনির অদৃশ্য হওয়ার গল্প মনে আছে নিশ্চয়ই। একটি আলখেল্লার মতো কাপড় পরে চোখের পলকেই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে যে কেউ। তবে এবার এটি শুধু রূপকথায় নয়, বাস্তবেই হতে চলেছে। তেমনই দাবি করলেন ব্রিটেনের এক দল বিজ্ঞানী।
লন্ডনের প্রযুক্তি-নির্ভর পোশাক নির্মাতা সংস্থা ভলিবাকের বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, বছর দুয়েকের মধ্যেই বাজারে আসতে পারে এমন পোশাক। ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের সঙ্গে যৌথভাবে থার্মাল ক্যামোফ্লেজ জ্যাকেট কিয়ে কাজ করছেন ভলিবাকের বিজ্ঞানীরা। যা মানবদেহকে ইনফ্রারেড ক্যামেরায় অদৃশ্য করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে এই অদৃশ্য জ্যাকেট তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে বলে মত গবেষকদের একাংশের। বর্তমানে রাতের অন্ধকারে কোনো মানুষকে খুঁজে পেতে অবলোহিত তরঙ্গ বা ইনফ্রারেড প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে যুদ্ধক্ষেত্রে এই রাতের অন্ধকারে শত্রুকে চিনতে এই প্রযুক্তি খুবই কার্যকর। এই ইনফ্রারেড ক্যামেরায় মানুষের দেহের উষ্ণতা ধরা পড়ে যায়। পোশাক পরেও দেহের তাপমাত্রা যেহেতু লুকিয়ে রাখা যায় না, তাই এই ক্যামেরার নজর এড়ানো খুবই কঠিন।
যে পোশাকটি বিজ্ঞানীরা তৈরি করছেন, তাতে ব্যবহার করা হয়েছে ‘গ্রাফিন’ নামের এক প্রকার নরম, স্বচ্ছ ও উচ্চপরিবাহী পদার্থ। দেহের তাপমাত্রা ঢেকে রাখতে ৪২টি গ্রাফিনের পট্টি বসানো হয়েছে জ্যাকেটে। প্রতিটি পিওর গ্রাফিন ১০০টিরও বেশি স্তর দিয়ে তৈরি।
বিজ্ঞানীদের দাবি, এই পদার্থটির মধ্য দিয়ে কত আয়ন পরিবহিত হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এই পদ্ধতিতে দেহের তাপমাত্রা যতই বেশি থাক, তা ঢেকে রাখা সম্ভব। সহজ কথায়, যেভাবে ফোনের পর্দার দীপ্তি কম বেশি করা যায়, কিছুটা তেমনভাবেই দৈহিক তাপমাত্রার কতটুকু পোশাকের বাইরে আসবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এই জ্যাকেটে।
তবে এখনই বাজারে আসছে না এই পোশাক। বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন করতে অন্তত দুই বছর সময় লাগবে বলে দাবি সংস্থার। বিজ্জানীরা বলছেন, আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছরের মধ্যে এটি বিশ্বের সব দেশে ছড়িয়ে যাবে।