‘উইলো’ নামে নতুন একটি চিপের উন্মোচন করেছে গুগল। এটি কোয়ান্টাম কম্পিউটিং-এর একটি সর্বশেষ উদ্ভাবন। চিপটি এমন সব সমস্যা সমাধান করতে পারে, যে সব সমস্যা বিশ্বের দ্রুততম সুপার কম্পিউটারগুলো দিয়ে সমাধান করলে ১০ সেপটিলিয়ন বছর সময় লাগবে।
বিট্রিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গুগল বলছে, উইলো ‘কার্যকর, বৃহৎ আকার কোয়ান্টাম কম্পিউটার’ তৈরি করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,‘উইলো’ এখনো একটি পরীক্ষামূলক ডিভাইস এবং বাস্তব-বিশ্বের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম এমন একটি শক্তিশালী কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করতে এখনো কয়েক বছর ও বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।
উইলো তৈরি করা গুগলের কোয়ান্টাম এআই ল্যাবের প্রধান হার্টমুট নেভেন বলেন, এটি পারমাণবিক ফিউশন রিয়েক্টরের নকশা তৈরি, ওষুধ কার্যকারিতা ভালো ভাবে বুঝা এবং সে অনুপাতে ফার্মাসিউটিক্যালের উন্নয়ন, গাড়ির জন্য আরও উন্নত ব্যাটারি ডিজাইনসহ আরও অনেক কাজের জন্য প্রাসঙ্গিক হতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলো সাধারণ কম্পিউটারের তুলনায় সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে কাজ করে। এটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া, যা সকল সমস্যার দ্রুততর সমাধান দিতে পারে এই ধরনের কম্পিউটার। তবে একই সাথে, এটি এনক্রিপশন ভেঙে ডেটা নিরাপত্তা হুমকির কারণ হতে পারে এই প্রযুক্তি।
উইলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হলো এর ত্রুটি সংশোধন ক্ষমতা। গুগল দাবি করেছে, তারা এমন একটি চিপ তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে যেখানে কিউবিট বাড়ানোর সাথে সাথে সিস্টেমের ত্রুটি কমে গেছে। এটি প্রায় ৩০ বছর ধরে গবেষকদের সামনে থাকা একটি বড় চ্যালেঞ্জ সমাধানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
তবে এখনো প্রায়োগিক কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি করতে ত্রুটির হার আরও কমানো প্রয়োজন। উইলো চিপটি গুগলের ক্যালিফোর্নিয়ায় একটি বিশেষায়িত কারখানায় তৈরি হয়েছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ে বিনিয়োগ করছে। যুক্তরাজ্য সম্প্রতি ন্যাশনাল কোয়ান্টাম কম্পিউটিং সেন্টার চালু করেছে। বিশেষজ্ঞরা উইলোর সাফল্যকে মাইলফলক হিসেবে দেখছেন এবং এটি দীর্ঘমেয়াদে লজিস্টিকস, টেলিকম এবং জ্বালানি ব্যবস্থাপনা সমস্যাগুলো সমাধানে সহায়ক হতে পারে বলে আশা করছেন।
এই গবেষণার ফলাফল বিজ্ঞান জার্নাল ন্যাচার-এ প্রকাশিত হয়েছে।