মন্ত্রী ও বিটিআরসির নির্দেশনা মেনে বেসরকারি তিন অপারেটর কোম্পানি শুক্রবার (১০ নভেম্বর) রাত ১২টা থেকে ইন্টারনেটের দাম কমাবে কি না, তা জানতে উন্মুখ হয়ে আছেন গ্রাহকরা। অপারেটরদের কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছে বিটিআরসিও।
শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত গ্রামীণফোন, বাংলালিংক ও রবির উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানা যায়নি। তবে দুটি অপারেটর সূত্র জানায়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সম্মানে শনিবার থেকে ৭ দিন মেয়াদি ইন্টারনেট প্যাকেজে কিছুটা সংশোধন আনতে পারে তারা। বাতিল করা ৩ দিন মেয়াদি প্যাকেজের মূল্য কিছুটা সমন্বয় করা হতে পরে। এ নিয়ে অপারেটরগুলো কাজ করছে।
অন্যদিকে গ্রামীণফোনের অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা গেছে, গ্রামীণফোন ৭ দিন মেয়াদে এক জিবির প্যাকেজের দাম কিছুটা কমিয়ে ৪৮ টাকা করেছে। যদিও এ প্যাকেজে ডাটা ভলিউম মাত্র ২০০ এমবি। সঙ্গে ৮২৪ এমবি বোনাস দিয়ে এক জিবির প্যাকেজ অফার করছে অপারেটরটি। সাতদিন মেয়াদে ২ জিবির প্যাকেজের দাম ঠিক করেছে ৬৯ টাকা। এখানেও এক জিবি মূল ভলিউম ও এক জিবি বোনাস। এছাড়া ২ জিবি মূল ভলিউম ও এক জিবি বোনাসহ ৩ জিবির ৭ দিন মেয়াদি প্যাকেজ ৯৮ টাকায় পাচ্ছেন গ্রামীণফোন গ্রাহকরা।
মারজান নামে এক গ্রাহক গ্রামীণফোনের ডাটা প্যাকেজের দাম কমানো নিয়ে ফেসবুকে করা মন্তব্যে লিখেছেন, ‘শুধুমাত্র ১ জিবি, ২ জিবি ও ৩ জিবি ছাড়া বাকি সব আগের দামে রয়েছে। এটা আইওয়াশ। পাবলিককে বোকা বানানো। টেলিটক বাদে এখনো কেউই দাম কমায়নি।’
গত ৭ নভেম্বর বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম রেজাউর রহমানের সই করা চিঠিতে বলা হয়, নতুনভাবে প্রচলন করা বিভিন্ন মেয়াদের ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম গ্রাহকদের মধ্যে অসন্তোষ, হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, তিনদিনের প্যাকেজের যে দাম ছিল, সেই দামেই ওই পরিমাণ ডাটা ভলিউম সাতদিনের মেয়াদ দিতে হবে। নতুন করে দাম বাড়ানো যাবে না। একই সঙ্গে ৩০ দিন ও আনলিমিটেড মেয়াদের প্যাকেজের দামও বাড়ানো যাবে না।
মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) একটি সূত্র জানায়, বিটিআরসি থেকে কিছু প্যাকেজের দাম কমাতে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তার ভাষাকে নির্দেশনা হিসেবে মনে করছে না অপারেটরগুলো। তাই এটি প্রতিপালন বাধ্যবাধকতা পর্যায়ের বা আইন হিসেবে দেখার সুযোগ নেই।
একই সঙ্গে দাম বেঁধে দেওয়ার বিষয়টি যেভাবে প্রকাশিত হয়েছে, তা ট্যারিফ গাইডলাইন এবং প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনের সঙ্গেও সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
ইন্টারনেটের দাম কমানোর নির্দেশনা ও অপারেটরগুলোর অবস্থান নিয়ে যে ‘ধুম্রজাল’ সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে অপারেটর কোম্পানির কর্মকর্তা, অ্যামটব ও বিটিআরসির কেউ গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না।
গত ১৫ অক্টোবর থেকে মোবাইল ইন্টারনেটের তিন ধরনের প্যাকেজ কার্যকর হয়। ওইদিন থেকে ৩ ও ১৫ দিনের প্যাকেজ বাতিল করে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র ৭ ও ৩০ দিন এবং আনলিমিটেড মেয়াদের প্যাকেজ কিনতে পারছেন গ্রাহকরা। অপারেটরদের প্রবল আপত্তির মুখেই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছিল বিটিআরসি।