আজ তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের তৈরিকৃত ভিডিও কনফারেন্স প্লাটফর্ম ‘বৈঠক’এর বেটা সংস্করণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক ব্যবহারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড.এ কে আব্দুল মোমেন। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে তথ্যই হয়ে উঠেছে প্রধান চালিকাশক্তি । তিনি বলেন আইসিটি বিভাগের বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ব্যবস্থাপনায় তৈরি বৈঠক প্ল্যাটফর্মটি বাংলাদেশের সফটওয়্যার শিল্পের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ।
তিনি আরো বলেন তথ্যপ্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে না পারলে বহুমাত্রিক উপযোগিতা থেকে আমরা বঞ্চিত হব। ডাটা সিকিউরিটি নিয়ে আমাদের সব সময় সজাগ থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন মন্ত্রণালয়ের কাজকর্ম সঠিকভাবে এগিয়ে নিতে এবং সার্বিক যোগাযোগ আরও বেগবান করতে “বৈঠক” প্লাটফরমটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন”বৈঠক ভিডিও কনফারেন্স প্ল্যাটফর্ম আত্মনির্ভরশীল ডিজিটাল বাংলাদেশের এক নতুন মাইলফলক।” তিনি বলেন “বৈঠক” প্ল্যাটফর্মটি হোস্ট করা হয়েছে আমাদের নিজস্ব ন্যাশনাল ডাটা সেন্টারে। ফলে বৈঠকে যে ভিডিও, তথ্য শেয়ার করা হবে সব কিছুই আমাদের বাংলাদেশেই থাকবে।
প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে বলেন বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের মানুষ ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তা যথাযথভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এবং আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদের পরামর্শে বিগত ১২ বছরে ডিজিটাল বাংলাদেশের যথাযথ উন্নয়ন ও অবকাঠামো গড়ে ওঠার কারণে দেশের সাড়ে ৪ কোটি শিক্ষার্থী শিক্ষা কার্যক্রম, লক্ষ লক্ষ ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের অনলাইন ই-কমার্স কার্যক্রম, ভার্চুয়াল কোর্ট, বিনোদন, সরবরাহ, এমনকি কোরবানির পশুর হাট পর্যন্ত ডিজিটাল প্লাটফর্মে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন “বৈঠক” প্ল্যাটফর্মের বেটা ভার্সন ব্যবহারের মাধ্যমে যে সকল পরামর্শ পাওয়া যাবে সেগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে ‘বৈঠক’ ভিডিও কনফারেন্সিং প্ল্যাটফর্মটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। প্রতিমন্ত্রী জানান ‘বৈঠক’ ভিডিও কনফারেন্স সফটওয়্যারটি আইসিটি বিভাগের বিজিডি ই-গভ সার্ট এর নিজস্ব জনবল দ্বারা তৈরী করা হয়েছে। এ ‘বৈঠক’ প্লাটফর্মটি তৈরীর জন্য সরকারের কোন প্রকার অর্থ ব্যয় হয়নি।
উল্লেখ্য,এ সফটওয়্যারের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে, ব্যবহারকারীর কম্পিউটার বা অন্য কোন ডিভাইস হতে ভিডিও ও অডিও এনক্রিপটেড অবস্থায় সার্ভারে প্রেরণ করা হয় এবং তা এনক্রিপটেড অবস্থায় অন্যান্য সংযুক্ত ব্যবহারকারীর কম্পিউটারে ডিক্রিপ্ট করা হয়। ফলে ম্যান ইন দ্যা মিডল আক্রমনের মাধ্যমে তথ্য চুরি বা আড়িপাতা সম্ভব নয়। ‘বৈঠক’ প্লাটফর্মের সকল তথ্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সঞ্চালিত হয় এবং রেকর্ডিং সমূহ বিসিসি’র জাতীয় ডাটা সেন্টারে রক্ষিত হয়, ফলে বাংলাদেশ সরকারের যেকোন ভিডিও কনফারেন্সের তথ্য সমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহি পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক প্ল্যাটফর্মটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।