ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষার চেয়ে ভাল কিছু হতে পারে না।বাংলায় স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং টুলস উদ্ভাবন শিশুদের প্রোগ্রামিং শেখার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ একটি কাজ। তিনি বলেন, ছোটদের জন্য প্রোগ্রামিং শিক্ষার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে স্ক্র্যাচ।তিনি এ ব্যাপারে প্রযুক্তিবিদ, শিক্ষাবিদ, সরকার ও ট্রেডবডিসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় বিডিওএসএন আয়োজিত স্ক্র্যাচ প্রোগ্রাম এর বাংলা সংস্করণ-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসোসিও-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ এইচ কাফি,কম্পিউটার সার্ভিসেস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমলুক ছাবির আহমেদ, বাংলাদেশ অপেন সোর্স নেটওয়ার্কস –এর মনির হাসান এবং প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব ড. লাফিফা জামাল বক্তৃতা করেন।
মন্ত্রী একটি ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর জাতি বিনির্মাণে শৈশব থেকেই প্রোগ্রামিং শেখার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিং শুরু করতে পারলে উচ্চ শিক্ষায় তার ভাল সুফল পাওয়া সম্ভব । সবাইকে কম্পিউটার প্রোগ্রামার হতে হবে সেটি নয়, কিন্তু স্ক্র্যাচ শিক্ষার্থীদের জন্য সকল ক্ষেত্রেই একটি ভিত্তি হিসেবে কাজ করে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বাংলা ভাষায় প্রকৌশল-বিজ্ঞানসহ প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষাদান ও কম্পিউটারের টুলসগুলোকে মাতৃভাষায় রূপান্তরের আহ্বান জানান। তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে ডিজিটাল প্রযুক্তি বাংলায় ব্যবহার করার জন্য যারা অবদান রেখেছেন তাদের সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং সকলকেই ডিজিটাল যুগটাকেও বাংলা ভাষার যুগে রূপান্তর করার আহ্বান জানান।
দেশের প্রথম ডিজিটাল সংবাদ সংস্থা আবাস-এর চেয়ারম্যান সাংবাদিক জনাব মোস্তাফা জব্বার ১৯৮৭ সাল থেকে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশে তার দীর্ঘ পথচলায় অগণিত প্রতিবন্ধকতা ও সফলতা তুলে ধরে বলেন, দেশে কম্পিউটারে প্রথম বাংলা পত্রিকা বের করেছি। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলা মূদ্রণ শিল্প ও প্রকাশনা জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে। শীশার হরফ থেকে উন্নত টাইপোগ্রাফির সূচনা করতে পেরেছি- এটাই আমার পরিচিতি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন যা করেছিলাম অন্তর থেকেই করেছিলাম বলেই পেরেছিলাম। কম্পিউটারে বাংলা ভাষা উদ্ভাবনে তিনি তার দীর্ঘ প্রচেষ্টা তুলে ধরেন এবং অ্যাপল এবং ম্যাকিন্টোস কম্পিউটার প্রযুক্তির কাছে গভীরভাবে কৃতজ্ঞ বলে তিনি উল্লেখ করেন। দেশে কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার কম্পিউটার প্রযুক্তি জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ১৯৯৬ পরবতী সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহীত কর্মসূচি তুলে ধরেন।মন্ত্রী পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর শিশুদের প্রযুক্তি উপযোগী শিক্ষায় গড়ে তুলতে প্রাথমিকভাবে ৬৫০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের ২৮ পাড়াকেন্দ্রে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা কার্যক্রম ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উদ্যোগে শুরু করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি ২০১৮ ও ১৯ সালে জাতীয় শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতা আয়োজনের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, আমাদের সন্তানরা অত্যন্ত মেধাবি তাদেরকে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে পারলে জ্ঞানভিত্তিক ডিজিটাল সাম্য সমাজ প্রতিষ্ঠায় উপযুক্ত মানবসম্পদ হিসেবে তাদেরকে কাজে লাগানো সম্ভব।
সভাপতির বক্তৃতায় ড. জাফর ইকবাল বলেন, আগামীদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় শিশুদেরকে দক্ষ মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে হবে এবং বাংলা ভাষায় প্রযুক্তি শিক্ষার বিকল্প নেই।