৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ নামকরণের এক ঐতিহাসিক দিন। ১৯৬৯ সালের এই দিনে ঢাকায় আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামকরণের একটি ঘোষণা দেন। বঙ্গবন্ধু কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামে অভিহিতকরণ উপলক্ষে ডাক অধিদপ্তর দশ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক ডাকটিকেট, দশ টাকা মূল্যমানের একটি উদ্বোধনী খাম ও ৫ টাকা মূল্যমানের একটি ডাটা কার্ড প্রকাশ করেছে। এই উপলক্ষে একটি বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করা হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার আজ শনিবার ঢাকায় তার দপ্তর থেকে স্মারক ডাকটিকেট ও উদ্বোধনী খাম অবমুক্ত করেন এবং ডাটা কার্ড উদ্বোধন করেন। তিনি এসময় বিশেষ সীলমোহর ব্যবহার করেন।এই উপলক্ষে মন্ত্রী বিবৃতি দিয়েছেন।
মন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন,১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার দুই বছর আগেই দেশটির নামকরণ করেছিলেন জাতির হাজার বছরে ইতিহাসের মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বঙ্গবন্ধুর কারাজীবনে লেখা ডায়েরি নিয়ে রচিত ‘‘কারাগারের রোজনামচা’’ বইয়ের একটি অংশের উদ্ধৃতি দিয়ে জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, ১৯৬৯ সালের ৫ই ডিসেম্বর গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দির ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকায় আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন, “আমাদের স্বাধীন দেশটির নাম হবে বাংলাদেশ”। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওই আলোচনা সভায় বলেন, ‘‘এক সময় এদেশের বুক হইতে, মানচিত্রের পৃষ্ঠা হইতে ‘বাংলা’ কথাটির সর্বশেষ চিহ্নটুকু চিরতরে মুছিয়া ফেলার চেষ্টা করা হইয়াছে।…একমাত্র ‘বঙ্গোপসাগর’ ছাড়া আর কোনও কিছুর নামের সঙ্গে ‘বাংলা’ কথাটির অস্তিত্ব খুঁজিয়া পাওয়া যায় নাই।…জনগণের পক্ষ হইতে আমি ঘোষণা করিতেছি আজ হইতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশটির নাম ‘পূর্ব পাকিস্তান’ এর পরিবর্তে শুধুমাত্র ‘বাংলাদেশ’।’’ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ইতিহাসবিদদের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন অবসানের পর ১৯৪৭ সালে বঙ্গ-প্রদেশ ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হল। সে সময় পাকিস্তানিরা পূর্ব বাংলার নাম দিতে চাইলো পূর্ব পাকিস্তান। কিন্তু এ নিয়ে সেই সময় থেকেই বিতর্ক শুরু হয়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ত্বে বাংলা ভাষার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায় বাংলা। এরপর ১৯৫৭ সালে করাচীতে পাকিস্তানের গণপরিষদের তরুণ সদস্য শেখ মুজিবুর রহমান বক্তৃতা দেয়ার সময় “পূর্ব পাকিস্তান” নামটির প্রতিবাদ করে বলেন যে, পূর্ব বাংলা নামের একটি ইতিহাস ও ঐতিহ্য আছে। “আর যদি পূর্ব পাকিস্তান নাম রাখতেই হয়, তাহলে বাংলার মানুষের জনমত যাচাই করতে হবে। তারা নামের এই পরিবর্তন মেনে নিবে কিনা – সেজন্য গণভোট নিতে হবে।” তিনি বলেন বাঙালি, বাংলা, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু একই সূত্রে গাঁথা।
ঢাকা জিপিও এর ফিলাটেলিক ব্যুরো আজ ৫ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে স্মারক ডাকটিকেট উদ্বোধনী খাম ও ডাটা কার্ড বিক্রি করবে। পরবর্তীতে দেশের সকল জিপিও ও ডাকঘরসমূহ থেকে বিক্রি করা হবে।
পূর্ব পাকিস্তানকে বাংলাদেশ নামে অভিহিত উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকেট অবমুক্ত করলেন ডাকমন্ত্রী
সাবস্ক্রাইব
নিরাপদ নিউজ আইডি দিয়ে লগইন করুন
0 মন্তব্য
সবচেয়ে পুরাতন