সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে রেল যোগাযোগ প্রায় স্বাভাবিক করার পরিকল্পনা নিয়েছে কর্তপক্ষ। এ লক্ষ্যে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর থেকে আরও ১৯ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করা হবে। স্বাস্থ্যবিধির কিছু কিছু বিষয়ও শিথিল করা হয়েছে। তবে সব টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত বলবৎ রাখা হয়েছে। অর্থাৎ কাউন্টারে টিকিট বিক্রি হবে না।
আজ মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুপুরে রেলের উপপরিচালক (ট্রাফিক ট্রান্সপোর্টেশন) খায়রুল কবিরের স্বাক্ষর করা আদেশ জারি করা হয়েছে। আর এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আন্তনগর ট্রেনের সিংহভাগই চালু হয়ে যাবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ১৮ জোড়া ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত হয়। এর বাস্তবায়ন হবে আগামী বৃহস্পতিবার। গত ৩১ মে থেকে বিভিন্ন সময় আরও ৩০ জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হয়। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে সব মিলিয়ে ৬৭ জোড়া (একই গন্তব্যে আসা-যাওয়া মিলিয়ে একটা ট্রেনকে এক জোড়া ধরা হয়) ট্রেন চালু হবে। এর মধ্যে চার জোড়া কমিউটার, এক জোড়া লোকাল ট্রেন। অর্থাৎ বাকি ৬২ জোড়াই আন্তনগর ট্রেন। রেলে সব মিলিয়ে ৩৫৫টি যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আন্তনগর ট্রেন ৫০ জোড়া বা ১০০টি। লোকাল ও কমিউটার ট্রেন আছে আরও দুই শতাধিক।
করোনা পরিস্থিতির কারণে গত মার্চের শেষ সপ্তাহে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৩১ মে সীমিত আকারে চালু হয়। তখন সিদ্ধান্ত হয় প্রতিটি ট্রেনের অর্ধেক আসনের টিকিট বিক্রি করা হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাতায়াত নিশ্চিত করার জন্য অর্ধেক আসন ফাঁকা রাখা হবে। এখনোই সেই সিদ্ধান্ত বলবৎ আছে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ঢাকা বিমানবন্দর, গাজীপুরের জয়দেবপুর ও টঙ্গী, নরসিংদী এবং কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজার স্টেশনে কোনো ট্রেন থামেনি। তবে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে বিমানবন্দর, জয়দেবপুর ও নরসিংদী স্টেশন পুরোপুরি খুলে যাবে। আর ভৈরববাজার স্টেশনে শুধু ঢাকা-সিলেট পথের আন্তনগর কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন থামবে।
করোনাকালে যাত্রার পাঁচ দিন আগে থেকে আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হতো। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ দিন আগে থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হবে। করোনার কারণে রাতের ট্রেনগুলোতে বার্থে (শুয়ে ভ্রমণ) চাদর, কম্বল ও বালিশ সরবরাহ বন্ধ ছিল। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে তা পুনরায় চালু হবে। করোনার সময় ট্রেনের খাবার গাড়ি বন্ধ ছিল। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে তা চালু হচ্ছে। অর্থাৎ চা, কফি, বোতলজাত পানি, চিপস-বিস্কুটসহ প্যাকেটজাত খাবার পাওয়া যাবে। তবে রান্না করা নাশতা আরও দেরি হবে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এ ছাড়া রেলওয়ে পাশ ও মিলিটারি পাশধারীদের টিকিট দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হবে।
রেলের কর্মকর্তারা বলছেন, ট্রেনের সংখ্যা বাড়লেও যাত্রী বাড়ছে না। এর একটা মূল কারণ হচ্ছে, কাউন্টারে টিকিট বিক্রি না করা এবং লোকাল ও কমিউটার ট্রেনের সংখ্যা কম হওয়ায়। তারা বলছেন, অধিকাংশ যাত্রীরই অনলাইনে টিকিট কাটার সুযোগ নেই। যাত্রী বেশি হয়-এমন ট্রেন, যেমন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথের কমিউটার ট্রেন, ঢাকা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া পথের তিতাস কমিউটার চালু করা হচ্ছে না। এতে ট্রেন চালিয়ে খরচই উঠছে না।