রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে বসবাসরত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিনুল ইসলামের গন্তব্য বাড্ডায়। সকালে বাসা থেকে বেড়িয়ে অন্যদিনের মতো সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাড়া করতে গিয়ে অনেকটা অবাক হলেন তিনি। রাতের ব্যবধানে এই বাহনটিতে ভাড়া দ্বিগুণ হয়ে গেছে। অথচ ডিজেল, অকটেন, পেট্রলের দাম বাড়লেও গ্যাসের দাম বাড়েনি।
শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে রাজধানীতে সব ধরনের যানবাহনে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে।
আমিনুল ইসলাম জানান, সিএনজিই শুধু নয়, বাস ও মোটরসাইকেলেও ভাড়া বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। যেই মোটরসাইকেলে আগে ভাড়া নিতো ১৫০ টাকা সেটি এখন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা দাবি করা হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাসে উঠতে চাইলেও বাধে বিপত্তি, কারণ সড়কে হাতে গোনা কিছু বাস থাকলেও ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণ। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের নাজেহাল অবস্থা।
গ্যাসের দাম না বাড়লেও ভাড়া কেন বাড়লো জানতে চাইলে একজন সিএনজিচালক বলেন, রাস্তায় তো গাড়ি নাই, ভাড়া তো একটু বেশি হইবৌ। বাসে তো দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে যাইতে হইতাছে, ওরা একবাসে লোক দিচ্ছে ৫০ জনের বেশি। কিন্তু আমি তো একজন নিয়াই চালাইতাছি, তাইলে আমার এইখানে দাম বাড়বো না কেন। পাবলিকের যত সমস্যা সিএনজির সঙ্গেই।
বাসের ভাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অনাবিল পরিবহনের হেলপার শহিদুল জানান, গতকালকে তো সব কিছুর দাম বাড়ছে। রাত থেকেই তো বাড়ছে, তাই আমরাও ভাড়া বাড়াইছি। এহন আমরা নিজেগো মতো ভাড়া নিতাছি, পরে সরকার নির্ধারণ কইরা দিলে তেমনে ভাড়া নিমু।
এদিকে জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে সৃষ্টি পরিস্থিতির জন্য অনেকেই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
রাজিউল হাসান নামের একজন গণমাধ্যমকর্মী লিখেছেন, ‘আজ রাজধানীসহ সারা দেশে যে পরিবহনের সংকট চলছে, তা কিন্তু জ্বালানির দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে নয়। মানবসৃষ্ট এই সংকট পরিবহন ভাড়া বাড়াতে। মজার বিষয় হলো, ডিজেল-পেট্রোলের দাম বেড়েছে কাল রাতে, আর আজ সকালেই বেড়ে গেছে রিকশা সিএনজিচালিত অটোরিকশার ভাড়া। এভাবেই অচিরেই আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে সবকিছুর ব্যয় ৫০ শতাংশ বা তার বেশি বাড়বে। কিন্তু আমাদের আয় বাড়বে না।
তিনি আরও লেখেন, ‘ক্ষেত্র বিশেষে আমাদের আয় কমবে, মন্দার নামে চাকরি হারাব আমরা। এই কঠিন সময়ে একটা গোষ্ঠী কিন্তু ভালো থাকবে। কারণ তারা কালো টাকার মালিক। আমিও আমার পরিবারকে, নিজেকে ভালো রাখতে এখন কালো টাকার মালিক হতে চাই। কিন্তু সেটা কীভাবে অর্জন করতে হয়, তা তো আমার জানা নেই। তাই ভাবছি, আমার কাছে যে দু-চার-পাঁচ শ টাকা আছে সেগুলোয় কালো রঙ মেখে দেব। আপাতত এভাবেই কালো টাকার মালিক হওয়ার ব্যক্তিগত উদ্যোগটা শুরু করব।’