সারাদেশে চলমান বিধিনিষেধ শিথিল ঘোষণার প্রথম দিনে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে যানবাহনের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ৩ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
তীব্র ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। ফেরি স্বল্পতা, পদ্মায় তীব্র স্রোত ও অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে এই ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে লঞ্চ চালু থাকার কারণে অনেক যাত্রীরা বাস থেকে নেমে লঞ্চে পদ্মা পারাপার হচ্ছেন। এতে করে বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বাড়তে দেখা গেছে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি ও ১৭টি লঞ্চ দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করছে।
সরজমিনে আজ বুধবার (১১ আগস্ট) সকাল থেকে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা পর্যন্ত পণ্যবাহী পরিবহনের সিরিয়াল ও দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল পর্যন্ত যাত্রীবাহী পরিবহনের সারির সৃষ্টি হয়েছে। এখানে প্রায় ৩শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক যানজট মুক্ত রাখার জন্য রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গোয়ালন্দ মোড় এলাকায় ৪শতাধিক ট্রাক ও ক্যাভার্ডভ্যান আটকে দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ।
যশোর থেকে আসা যাত্রী আলী আশরাফ জানান, বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে তাই জরুরি কাজে ঢাকা যাওয়ার জন্য ভোর সাড়ে ৪টায় যশোর থেকে রওনা দিয়েছি। বর্তমানে ফেরিঘাট এলাকায় এসে আটকে পড়েছি। যে যানজট দেখা যাচ্ছে তাতে আরও ২-৩ ঘণ্টা লেগে যাবে ফেরিতে উঠতে।
কালীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ভুট্টা বোঝাই বিআরটিসি ট্রাক চালক উসমান গনি (৩৫) জানান, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টায় গোয়ালন্দ মোড়ে আসলে ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকে দেয়। বুধবার সকাল ৯ টায় গোয়ালন্দ মোড় থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে মডেল স্কুলের এখানে আটকে আছি, জানিনা কখন ফেরিতে উঠতে পারবো।
এদিকে শিমুলিয়া কাঠালবাড়ী ফেরিঘাটে নানা ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। সেই রুট দিয়ে পারাপার অনেকটাই অনিশ্চিত। যে কারণে এই রুটে পণ্যবাহী ট্রাক ও ক্যাভার্ডভ্যানের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রুটে ফেরির সংখ্যা বৃদ্ধি না করলে ভোগান্তি আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট ম্যানেজার নুরুল আমিন মিলন জানান, সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ৩৪টি লঞ্চ থাকলেও ১৭টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে। সকালে যাত্রীর চাপ তেমন না থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীর চাপ কিছুটা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ম্যানেজার মো. শিহাব উদ্দীন বলেন, ‘বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিনে গণপরিবহন চালুর পাশাপাশি অন্যান্য যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে অপেক্ষা করে ফেরি পার হতে হচ্ছে। তবে স্রোতের কারণে ফেরি চলাচল কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে ফেরির ট্রিপ সংখ্যা কমে এসেছে।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ছোট বড় ১৩টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে এবং এই নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে ৭টি ফেরিঘাটের মধ্যে ৫টি ঘাট চালু রয়েছে। তবে স্রোতের কারণে ৪ নম্বর ঘাটে ছোট ফেরি ভিড়তে পারছে না।’