করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকেই আবার শুরু হচ্ছে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। এর আগে আজই গণপরিবহন চলাচলের শেষদিন। অথচ বৃহস্পতিবারও (২২ জুলাই) ঢাকা ছাড়ছেন মানুষ। আবার অনেকে গ্রামে ঈদ কাটিয়ে ঢাকায় ফিরছেন।
ঈদের দ্বিতীয় দিন যারা ঢাকা ছাড়ছেন, তারা বলছেন—করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করায় তাদের কোনো কাজ নেই। ফলে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই আবার যেভাবেই হোক ঢাকায় ফেরার আশা নিয়ে গ্রামে যাচ্ছেন তারা।
আর ঈদ কাটিয়ে ঢাকায় ফেরা যাত্রীরা বলছেন—বিধিনিষেধে অফিস বন্ধের কথা থাকলেও অনেক অফিসই খোলা থাকবে। আবার বিধিনিষেধ কয়েকদিন চলার পর হঠাৎ অফিস খুলে দিতে পারে, তাতে বিপদে পড়তে হতে পারে। এজন্য তারা ঢাকায় ফিরছেন। তবে আসার সময় তারা সড়কে কোনো ঝামেলায় পড়েননি।
বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্টেশনে প্রবেশপথে বলাকা কমিউটার, কর্ণফুলী, জামালপুর কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
টিকিট কিনতে লাইনে দাঁড়ানো যাত্রীরা জানান, ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় তারা আজ গ্রামের বাড়ি চলে যাচ্ছেন।
জামালপুর কমিউটার ট্রেনের টিকিট কেনার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন মোজাম্মেল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সামনে ১৪ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ। সেজন্য গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছি। চার থেকে পাঁচ দিনের দিনের মধ্যে আবার ঢাকায় ফিরতে হবে।’
কঠোর বিধিনিষেধে কীভাবে ঢাকায় ফিরবেন, জানতে চাইলে মোজাম্মেল মুচকি হেসে বলেন, ‘সে যেভাবেই হোক একটা ব্যবস্থা করায় যাবে!’
রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসা সিল্কসিটির যাত্রী মেরিনা জাহান জানান, তিনি সরকারি চাকরিজীবী। এজন্য ঢাকায় তাড়াতাড়ি ফিরতে হয়েছে। ঈদ কাটিয়ে রাজধানীতে ফেরার পথে কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের দ্বিতীয় দিন আজ শেষ দিনের মতো ট্রেন চলাচল করছে। এদিনও ঢাকা ছাড়ছেন অনেকে, আবার অনেকে ঢাকায় ফিরছেন। তবে গ্রামে যাওয়ার চেয়ে ঢাকায় ফেরা যাত্রীর সংখ্যা বেশি।’
ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের যাত্রী সাইফুল হক সপরিবারে নেত্রকোনায় গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের আগে অনেক চেষ্টা করেও ট্রেন এবং বাসের টিকিট পায়নি। এজন্য পরের দিন সবাইকে নিয়ে ট্রেনে বাড়ি যাচ্ছি।’
সাইফুল আরও বলেন, ‘গত দুই বছর ধরে বাড়িতে যাওয়া হয় না। এজন্য কষ্ট হলেও বাড়িতে যাচ্ছি। বিধিনিষেধের মধ্যেই আবার ঢাকায় ফিরতে হবে। বিধিনিষেধে তো অনেকেই তো অনেকভাবে যাতায়াত করছেন, আমাদেরও নিশ্চয়ই একটা ব্যবস্থা হবে।’