ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আবারো তীব্র যানজটে নাকাল হয়েছেন হাজার হাজার যাত্রী ও গাড়ি চালক। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত টানা ৬ঘন্টায় যানজট ছড়িয়ে পড়ে ফৌজদারহাট থেকে সোনাইছড়ি পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকায়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে গিয়ে যানজট নিরসনের চেষ্টা করলেও এ প্রতিবদন লেখা পর্যন্ত সড়ক সম্পূর্ণরূপে যানজট মুক্ত হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি, কাশেম জুট মিলস ও ভাটিয়ারীর বানুর বাজার এলাকায় অবস্থিত তিনটি কন্টেনার ডিপোতে প্রতিদিন হাজারো পন্যবাহী যানবাহন আসা যাওয়া করে। এই ডিপোগুলোতে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত শত শত পণ্যবাহী গাড়ি আসায় ভেতরে স্থান না পেয়ে গাড়িগুলো মহাসড়কের একপাশ দখল করে দাড়িয়ে থাকে। এরফলে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে ছোট হয়ে যায়। এতে গাড়ির চাপ কিছুটা বাড়লেই মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
এলাকাবাসী ও মহাসড়কের নিত্য যাত্রীদের অভিযোগ, এই যানজট এখন নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এমনকি লকডাউনের মধ্যেও এ তিনটি কন্টেনার ডিপো এলাকায় বারবার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। বারআউলিয়া এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক সৈয়দ ফোরকান আবু এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এসব ডিপোগুলোর সামনে প্রতিদিন তীব্র যানজটে আমরা নাকাল হচ্ছি। সাধারণ মানুষ, জরুরি রোগিবাহী এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি সেবায় নিয়োজিত গাড়িও আটকে থাকে ঘন্টার পর ঘন্টা। কিন্তু এসব ডিপো মালিকদের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই। হাইওয়ে পুলিশেরও তাদের বিরেদ্ধ কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতা আছে বলে মনে হয় না।
মহাসড়কের একজন নিত্য যাত্রী সীতাকুণ্ড পৌরসদরের বাসিন্দা মো. আনোয়ারুল হক বলেন, আবারো সেই ফৌজদারহাট থেকে সোনাইছড়ি পর্যন্ত ১২-১৪ কিলোমিটার যানজটের শিকার হয়েছি আমরা। বারবার এমনটা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা এখন এই ডিপো তিনটির এলাকায় যাবার আগেই ধরে নিই যে এখানে তীব্র যানজট থাকবে। তাতে কয়েক ঘন্টা আটকে থাকতে হবে এমন মানসিকতা নিয়ে সময় হাতে করেই কাজে যেতে হয় আমাদের। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, দিনের পর দিন মাসের পর মাস এভাবেই কাটছে?
সংশ্লিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে এই রাস্তা দিয়ে চলতে গিয়ে কাশেম জুট মিলস এলাকায় এরকম তীব্র যানজট দেখে নিজ গাড়ি থেকে সড়কে নেমে এসে প্রতিবাদ জানান সীতাকুণ্ড উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল বাকের ভূঁইয়া। তিনি সেখানে অবস্থিত বিএম কন্টেনার ডিপোর সিকিউরিটিসহ অন্যান্যদের কাছে সড়কের এ অবস্থা কেন জানতে চান? এবং তাদের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পোষ্ট দেন বাকেরের অনুসারী আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা।
এদিকে যানজটের কারণে দুর্ভোগের কথা মেনে নেন এ এলাকার দায়িত্বে থাকা বারআউলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি মো. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, তিনটি ডিপোতে তাদের ধারণ ক্ষমতার চেয়েও অনেক বেশি পণ্যবাহী গাড়ি আসে। এসব গাড়ি ডিপোতে স্থান না পেয়ে মহাসড়ক দখল করে দাড়িয়ে থাকে। এ কারণে বারবার যানজট হচ্ছে। আমরা বারবার ডিপোগুলোর কর্তৃপক্ষকে সড়ক যানজট মুক্ত রাখতে বলেও কোনো পরিবর্তন দেখছি না। বৃহস্পতিবারও এমনটা হয়েছে। চট্টগ্রাম মুখী সড়কে দীর্ঘ যানজট ছিলো। তবে তিনি রাত ১০টার আগে সড়কে যানজট নিয়ন্ত্রণ এসেছে বলে জানান।