সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার বহমান ফুলজোড় নদীতে পারাপারের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বজ্রাপুর ও ছাপরাপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে ফুলজোড় নদীর ওপর নির্মিত এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। নিজস্ব অর্থায়নে বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করেছেন ছাপরাপাড়ার গ্রামবাসী। ভরাট হয়ে যাওয়া ফুলজোড় নদীটি নতুন করে পুনঃখননের ফলে নদীর দুই পারের মানুষের চলাচলের এমন অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে বর্তমানে। নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মিত হলে বদলে যেতে পারে এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, করতোয়া নদীর শাখা নদী ফুলজোড় উল্লাপাড়া পৌর শহরের ঝিকিড়া পাট বন্দর থেকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে নদীটি শাহজাদপুর উপজেলার করতোয়ায় গিয়ে মিশেছে। দীর্ঘদিন নদীটি সংস্কারের অভাবে ভরাট হয়ে মরা নদীতে পরিণত হয়েছিল। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড গত অর্থবছরে উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়নের বজ্রাপুর ও ছাপরাপাড়া গ্রামের মধ্য দিয়ে ফুলজোড় নদীর আংশিক পুনঃখনন করলে উপজেলা শহরের সঙ্গে এ দুটি গ্রামের বাসিন্দাদের যাতায়াতের নতুন করে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
ছাপরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কাঠ ব্যবসায়ী নুর ইসলাম জানান, ভরাট হয়ে যাওয়া ফুলজোড় নদী পুনঃখননের আগে এলাকার মানুষের উপজেলা শহরের সঙ্গে যাতায়াতের কোনো অসুবিধা ছিল না। নদীটি পুনঃখননের ফলে পুরনো সমস্যা আবার নতুন করে দেখা দিয়েছে। ফলে গ্রামবাসী চাঁদা দিয়ে ৭০ হাজার টাকা ব্যয় করে নদীর ওপর যাতায়াতের জন্য কাঠের খুঁটি দিয়ে ৬০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। এ সাঁকো দিয়ে বর্তমানে দুই পারের মানুষ যাতায়াত করছে। তিনি আরো জানান, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে এই এলাকায় একটি ব্রিজ নির্মাণ করে জনগণের যাতায়াতব্যবস্থা নিশ্চিত করবে বলে তাদের প্রত্যাশা।
উল্লাপাড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু সালেক জানান, চলতি বছরে ফুলজোড় নদী পুনঃখনন করার ফলে ইউনিয়নের বজ্রাপুর ও ছাপরাপাড়া গ্রামবাসীর মধ্যে নদী পারাপারে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে নদীতে ব্রিজ নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মাধ্যমে ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ে অর্থ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান ভুইয়া জানান, আগামী অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে উপজেলার বজ্রাপুর এলাকায় ফুলজোড় নদীর ওপর প্রস্তাবিত ব্রিজটি নির্মাণ করা যেতে পারে।