সড়ক-মহাসড়কে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিতে ৬ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে এ বিষয়ে চিঠিও পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সম্প্রতি ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি জাতীয় সড়ক ও মহাসড়কে ব্যবস্থাপনাগত ত্রুটি লক্ষ্য করেন।
জ্যেষ্ঠ সচিবের পরিদর্শনে যেসব বিষয়ে পরিলক্ষিত হয়েছে, সেগুলো হলো-
(ক) মহাসড়কে অযান্ত্রিক ও ধীরগতির যান চলাচলের কারণে দূর পাল্লার নিরবচ্ছিন্ন যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে ও দুর্ঘটনার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
(খ) জাতীয় মহাসড়ক ও মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অপরিকল্পিত হাট বাজার এবং অবৈধ বাণিজ্যিক স্থাপনার কারণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে মূল্যবান জ্বালানি অপচয়, যাত্রীদের গন্তব্য পৌঁছতে অহেতুক বিলম্ব, জরুরি পণ্য সরবরাহে বিঘ্ন সৃষ্টিসহ জরুরি স্বাস্থ্য সেবাও ব্যাহত হচ্ছে।
(গ) নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের অভাবে বর্ষা মৌসুমসহ দুর্যোগকালীন নিরাপদ ও সুষ্ঠু যান চলাচল ব্যাহত হওয়ার কারণে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
(ঘ) পর্যাপ্ত ট্রাফিক আইন, সাইন পোস্ট, সড়ক মার্কিং, সড়ক বাতি, সড়ক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও সকল স্থানে কিলোমিটার পোস্ট না থাকায় বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটছে।
জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো চিঠিতে সড়ক ও মহাসড়কে নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিতকল্পে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান ছয় দফা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন। সেগুলো হলো-
(ক) প্রতিটি থানার অধিক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক ও মহাসড়কে নির্বিঘ্ন এবং নিরাপদ যান চলাচল নিশ্চিতকল্পে রোস্টার ডিউটির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক ৬ জন পুলিশ বা আনসার নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ।
(খ) অপরিকল্পিত ও অবৈধ বাণিজ্যিক বা আবাসিক স্থাপনা অপসারণে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ নিয়মিত উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা।
(গ) মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণ রেখার মধ্যে স্থাপিত সব ধরণের হাটবাজার অপসারণ করে জনসাধারণের সুবিধার্থে আলাদা স্থানে হাটবাজার স্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
(ঘ) জাতীয় সড়ক ও মহাসড়কে সব ধরণের অযান্ত্রিক ও ধীরগতির যান চলাচল বন্ধকরণে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ।
(ঙ) প্রতিটি যানবাহনে রাত্রিকালীন চলাচলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক সতর্কতামূলক ট্রাফিক ইনডিকেটর রয়েছে কি না তা নিশ্চিতকরণ এবং যানবাহনে কোনো নিষিদ্ধ লাইট সংযোজিত থাকলে সড়ক নিরাপত্তার স্বার্থে তা অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ।
(চ) সড়ক ও মহাসড়কে প্রয়োজনীয় ট্রাফিক সাইন, সাইন পোস্ট, সড়ক মার্কিং, সড়ক বাতি, সড়ক নিরাপত্তা বেষ্টনী স্থাপন নিশ্চিতকরণ।
চিঠিতে জনগণের ভোগান্তি লাঘব, গতিশীল যান চলাচল ও মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে উপর্যুক্ত পর্যবেক্ষণের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়।