বেলাল হোসেন রৌমারী: কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ১নং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ হতে বদিয়ার মোড় পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার রাস্তা খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এতে সংস্কারের অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২০গ্রামের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের বদিয়ার মোড় হতে সাহেবের আলগা বিজিবি ক্যাম্প পর্যন্ত রাস্তাটি বেহাল অবস্থায় রয়েছে। এ রাস্তা দিয়ে লাউবাড়ি, গাছবাড়ি, কাজাইকাটা, চরকাজাইকাটা, শান্তিচর, আন্দবাজার, আমবাড়ি কাউনিয়ারচর, খেতারচর, চরধনতোলা, খেওয়ারচর, চরগয়টাপাড়া, ডিগ্রীরচর, নামাজেরচর, পাড়েরচর, ইটালুকান্দাসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ চলাচল করে থাকেন।
১নং দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো.আবু সাইদ বলেন এই রাস্তাটা দিয়ে হাজার, হাজার লোকজন প্রতি দিন চলাফেরা করে। রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ার কারনে ভোগান্তি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে একাধিক গ্রামের লোকজন। এ ছাড়া প্রতিদিন ঘটছে নানা দুর্ঘটনা চলাচল করা খুবি কষ্টকর হয়ে পরেছে কোন প্রকার ভ্যান রিকশা মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারেনা। ফলে বাধ্য হয়ে পায়ে হেটে চরমভোগান্তিতে চলাচল করছি আমরা।
সরকারের কাছে আমাদের জোর দাবি দূরত্ব রাস্তাটি মেরামত করা হলে জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হবেনা।
ইটালুকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইব্রাহিম খলিল সরকার বলেন, প্রতিদিন ১২ কিলোমিটার বালুময় রাস্তা পাড়ি দিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে হয়। এ রাস্তা দিয়ে কোনো প্রকার যানবাহন চলা করতে পারে না। নিত্যদিন ধুলাবালু কারণে সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্ট হরহামেশা লেগেই থাকে। এছাড়াও গর্ভবতী মাসহ জরুরী প্রয়োজনে কোনো রোগিকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
কথা বলছিলাম মোছাঃ মিনারা খাতুন,সাধনা পারভিন, রোজিনা খাতুন, মোঃ মাহবুব আলম, লিটন মিয়া, সুমন আহমেদ সহ স্কুল,মাদ্রাসা, ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সাথে। তারা বলেন প্রতিদিন বিস্তর ভাঙ্গাচোরা রাস্তা পায়ে হেঁটে আমাদের যেতে হয় দাঁতভাঙ্গা স্কুল,মাদ্রাসা, এণ্ড কলেজের দিকে। চোখেমুখে ওদের বড় হওয়ার স্বপ্ন। সে স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকটাই বাধা যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী এ ভাঙ্গাচোরা রাস্তাটি।
একটা পোশাক একবার পড়লে আর দ্বিতীয়বার পড়তে পারি না। ধুলা বালুতে ময়লা হয়ে যায়। একটু বৃষ্টি হলে কাদায় ভরে যায় রাস্তাটি। ওই দিন আর স্কুলেই আসা হয় না। সরকারের কাছে এ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার দাবি তাদের।
দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রামের কৃষক আফতার হোসেন, আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণে উপজেলা সদরের সাথে একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা এটি।
রাস্তাটির বেহাল দশা হওয়ার কারনে আমাদের কৃষিপণ্য বাজারে যানবাহনে নিতে না পারায় ফড়িয়াদের কাছে কমদামে বিক্রি করতে হয়। অপরদিকে কৃষিকাজে ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রী বাজার থেকে আনতে খরচ বেশী হয়। ফলে আমাদের উৎপাদনে যেমন ব্যয় বেশী হচ্ছে, তেমনি আমরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের যে বরাদ্দ আসে, তাতে বড় প্রকল্প হাতে নেওয়া যায়না। রাস্তাটি সংস্কারের বিষয়ে উপজেলা সমন্বয় সভায় উপাস্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা প্রকৌশলী রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন।
রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দা:) মামুনুর ইসলাম বলেন, রাস্তাটি একটি নতুন প্রকল্প রুরাল ডেভেলপমেন্ট (আরডি)তে অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে। গত সপ্তাহে আরডি কতৃপক্ষের কাছে রাস্তার আইডি সঠিক নাম হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা জানিয়েছে, আগামী মাসের মধ্যে রাস্তার সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।