বরগুনার আমতলী পৌর শহরের নতুন বাজার বাঁধঘাট মহাসড়কে সাপ্তাহিক ধান চালের হাট বসার কারণে যানবাহনসহ সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে এবং যেকোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের আমতলী নতুন বাজার বাঁধঘাট বটতলা থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কটি পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে। বছরের পর বছর ওই সড়কের দু’পাশের খোলা জায়গায় প্রতি সপ্তাহের (বুধবার) ধান ও চালের হাট বসতো। কিন্তু অবৈধ দখলদাররা ওই সড়কের দু’পাশে স্থাপনা নির্মাণ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে ধান ও চালের হাটের জন্য নির্ধারিত খোলা জায়গাটি দখল করে নিয়েছেন। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সকল স্থাপনাগুলো ভেঙে দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলেও গত কয়েক বছরে আবারো তা দখল করে নিয়েছেন অবৈধ দখলদাররা। এ কারণে এখন বাধ্য হয়ে ধান ও চালের হাটটি মহাসড়কের ওপর বসতে হচ্ছে। ফলে স্কুল ও কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
প্রতি বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর চলে ধান ও চালের কেনাবেচা। ধান বহনকারী নছিমন, করিমন, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন রাখা হয় মহাসড়কের ওপর। এতে মহাসড়কের প্রায় অর্ধেক অংশ দখল হয়ে যায়। অভ্যন্তরীন ও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন নতুন বাজার বাঁধঘাট মহাসড়কের ওই স্থানে গিয়ে আটকে পড়ে। এতে সড়কে সৃষ্টি হয় যানজট। এ কারণে স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতেও বাধাগ্রস্ত হয়।
আজ (বুধবার) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নতুন বাজার বাঁধঘাট এলাকায় মহাসড়কের ওপরে বসে ধান ও চাল কেনাবেচা হচ্ছে। কৃষকেরা নছিমন, করিমনসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে ধান নিয়ে এসে বিক্রির জন্য মহাসড়কের ওপর রেখেছেন। ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে ধান ও চাল কেনার পর মহাসড়কের ওপর স্তুপ করে রেখে দিয়েছেন। এতে সড়কের দুই পাশ দখল হয়ে যাওয়ায় ঢাকাগামী কয়েকটি বাসসহ অভ্যান্তরীন রুটের বিভিন্ন যানবাহন আটকে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে যানজট।
ধান বিক্রি করতে আসা কয়েকজন কৃষক বলেন, মহাসড়কের পাশেই ধান কেনাবেচা হয় বলে তারা এটাকে ধান মহাল বলে জানেন। তাই মহাসড়কের পাশেই তারা ধান নিয়ে দাঁড়ান।
ধানের একজন ক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সুবিধামতো কোনো জায়গা না থাকায় বাধ্য হয়েই মহাসড়কের পাশেই আমাদের ধান কেনার কাজটা করতে হয়।
পটুয়াখালী-আমতলী-কলাপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচলরত একটি যাত্রীবাহী বাসের চালক আ. সালাম বলেন, বুধবার এ সড়ক দিয়ে বাস চালানো খুব কষ্টকর।
আমতলী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম ও মেনেরুন নেছা বলেন, প্রতি বুধবার ওই সড়ক দিয়ে হেঁটে বা রিকশায় করে কলেজে যেতে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
আমতলী পৌর মেয়র মো. মতিয়ার রহমান মুঠোফোনে জানান, বাজারটি পূর্বের নির্ধারিত স্থানে বসানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সড়ক বিভাগকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার আলম মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে ব্যবস্থা নেয়া হবে।